Image description

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বিপ্লব-উত্তর বাংলাদেশে এটি প্রথম স্বাধীনতা দিবস। জুলাই বিপ্লবের পরিপ্রেক্ষিতে দিবসটি নতুন তাৎপর্যে উদ্ভাসিত। দেশের মানুষ এবার স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাধীনতা দিবস পালনের সুযোগ পাচ্ছে। বিগত সময়ে স্বাধীনতার নানা ব্যর্থতা পূরণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে চব্বিশ এসেছে।

সেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে এবার উদযাপিত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস। গত ১৬ বছর দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি বলে এবারের স্বাধীনতা দিবসের বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন।

দিবসটি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, চব্বিশের জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের স্মরণ করেছেন তিনি। সংবিধান সংস্কার কমিশন তার সুপারিশে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত সংবিধানের প্রস্তাবনায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পাশাপাশি চব্বিশের আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে প্রতিষ্ঠার বিষয়টি নিয়ে এসেছে।

কারচুপি, একতরফা ভোটারবিহীন নির্বাচন, রাতের ভোট ও তথাকথিত আমি-ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা সাড়ে ১৫ বছর দেশ শাসন করেছেন। এ সময় রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার পাশাপাশি দেশের মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নিজেদের মতো করে প্রচার করেছে।

শেখ মুজিব ও হাসিনা বন্দনাই প্রাধান্য পেয়েছিল ওই গোটা সময়টায়। নিজেদের স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। এ সময়ে সবক্ষেত্রে আওয়ামীকরণ করা হয়েছিল। দেশের মানুষ স্বাধীনতা দিবস আর বিজয় দিবস কোনোটাই গত সাড়ে ১৫ বছর স্বাধীনভাবে পালন করতে পারেনি। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। সংস্কারের প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ একটি পথে যাত্রা শুরু করেছে। সময় এসেছে নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার পাশাপাশি দেশের ইতিহাসের সত্যটাকে চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠার।

রাজনৈতিক নেতাদের মতে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা। তাদের মতে, চব্বিশ হচ্ছে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা মুক্তিযুদ্ধের অধরা অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানে স্বাধীনতা সম্পর্কীয় দীর্ঘকালের আওয়ামী-বাকশালী বয়ান ধূলিসাৎ হয়েছে। এখন সময় এসেছে দেশপ্রেম, সাম্য, গণতন্ত্র, ইনসাফের প্রেক্ষিতে নতুন বয়ান তৈরি করে জনগণের কণ্ঠে কণ্ঠে উচ্চারণের ব্যবস্থা করার।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। সেখানে তিনি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদের স্মরণের পাশাপাশি চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহততের প্রতি সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ সালাম জানিয়েছেন। ভাষণে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের যে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এনে দিয়েছে, সে সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে চাই।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত ১৬ বছর দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। স্বৈরাচারী শাসক জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে তাদের স্বাধীনতা ও মৌলিক সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থান দেশের মানুষকে স্বৈরাচারের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করেছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহত করতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণে আবারও বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, স্বাধীনতার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহত করতে হবে। রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণে আবারও বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাণীতে বলেন, একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এ দেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। দুর্ভাগ্যক্রমে গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত এখনো থেমে নেই। বারবার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অবৈধ শক্তি আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হোঁচট খেয়েছে এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে ফেলেছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর আজও তাই এ দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি। ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করার। এটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা।

বিপ্লব-উত্তর বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আমার দেশকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কারবিষয়ক সমন্বয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বিশ্বমানচিত্রে জায়গা করে নেওয়া এক বড় অর্জন বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও গত ৫৪ বছরে রাজনৈতিক বন্দোবস্ত রাজনৈতিক দলসহ রুলিং এস্টাবলিশমেন্টের কারণে স্বাধীনতার সুফল জনগণ পায়নি। তারা তাদের কায়েমি স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ায় রাষ্ট্র গঠন অসম্পূর্ণ থেকে গেছে। ফলে জনগণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উপযোগী গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন করতে না পারা সবচেয়ে বড় ব্যর্থতাগুলোর মধ্যে অন্যতম কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, চব্বিশ এসেছে সেই ব্যর্থতা পূরণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। এবারের মহান স্বাধীনতা দিবস এই নতুন বাস্তবতায় পালিত হচ্ছে। গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক সুবিচার এবং মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করেÑ এমন এক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ পুনর্গঠন করার উদ্দেশ্যেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান হাজির হয়েছে। আমরা এমন এক বাংলাদেশের জন্য কাজ করছি যেখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র‍্য, ধর্মীয় সম্প্রীতি, পাচারবিরোধী উৎপাদনশীল অর্থনীতি বিরাজমান থাকবে। সমাজ হবে দায় ও দরদের। আমরা মনে করি চব্বিশ এমন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা মুক্তিযুদ্ধের অধরা অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া মুহম্মদ গোলাম পরওয়ার আমার দেশকে বলেন, আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য আজও অর্জিত হয়নি। অনেকে বলেছেন, আমরা ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। ফ্যাসিবাদ বিদায়ের কারণে দেশবাসী আশাবাদ ব্যক্ত করে যে, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার- যেটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিল, সেটা এবার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, ফ্যাসিবাদবিরোধী জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করবে।

এবারের স্বাধীনতা দিবস আমরা এরকম একটা আশাবাদ নিয়েই উদযাপন করছি। যদিও দেশের ভেতরে ও বাইরের অনেক ষড়যন্ত্র আমাদের এ প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে একটি জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তদান সফল করার জন্য সবাইকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই স্বাধীনতার সুফল জনগণ পাবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতা দিবসকে নতুনভাব দেখার কিছু নেই। তবে উদযাপনটা কীভাবে হবে- এবার হচ্ছে সে বিষয়। স্বাধীনতা দিবস বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে আমরা বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবসটিকে স্বাধীনভাবে উদযাপন করতে পারিনি। আমার পুনরায় যেন স্বাধীন হয়েছিÑ এমনটা ভেবে এই দিবসটি উদযাপন করছি। এবার আমরা যে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছি, সেটিই প্রকৃত বাংলাদেশর স্বাধীনতা দিবস।

প্রফেসর ড. মাহবুবউল্লাহ বলেন, স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে দীর্ঘকাল ধরে যে আওয়ামী-বাকশালী বয়ান চলছিল, সেই বয়ান ৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এখন প্রয়োজন সেই বয়ানের পরিবর্তে দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, সাম্য, গণতন্ত্র, ইনসাফের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে একটি বয়ান তৈরি করা। আমরা যদি সম্মিলিত মেধা দিয়ে সেই বয়ান তৈরি করতে ব্যর্থ হই, তাহলে সেই ফ্যাসিবাদী শক্তি ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের দোসররা ফেরত আসবে। কারণ, তাদের অর্থবিত্তের অভাব নেই। লোকবলও রয়েছে। তারা কোনোরকম অনুশোচনা কিন্তু করেনি।

নতুন করে বয়ান তৈরির পাশাপাশি তার প্রচারও জরুরি উল্লেখ করে এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, শুধু বয়ান তৈরি করলেই হবে না; এই বয়ানটা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে এবং জনগণের কণ্ঠে কণ্ঠে উচ্চারণের ব্যবস্থা করতে হবে।

আগস্ট বিপ্লবের সময়কালে যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তাতে খানিকটা চিড় ধরেছে বলে মনে করেন মাহবুবউল্লাহ। তিনি বলেন, বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টি হয়েছে, ৬-৭ মাস পর এসে মনে হচ্ছে সেই ঐক্যে কিছুটা চিড় ধরেছে। এই চিড় ধারাটা নিঃসন্দেহে কাঙ্ক্ষিত নয়। কারণ, শত্রু পরাজিত হলেও বাগ মানেনি। কাজেই সমূলে তা উৎপাটন করতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। রাজনৈতিক আদর্শের প্রশ্নে ভিন্নতা থাকতে পারে। চিন্তার প্রশ্নে ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ভিন্নতার সুযোগ নেই। জাতির প্রকাশ্য শত্রু হচ্ছে আধিপত্যবাদ। এই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য জারি রাখার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।

কর্মসূচি

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বাণী দিয়েছেন। আজ প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।

এ ছাড়া জেলা ও উপজেলার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। দেশের সব বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবন এবং ঢাকা শহরের দৃশ্যমান ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।

ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা এবং অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে। আজ দিনটি সরকারি ছুটি।

দেশের সব শিশুপার্ক ও জাদুঘর বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জাহাজগুলো এদিন সকাল ৯টা হতে বেলা ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।