
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন অভিঘাতে এই উপজেলায় পানীয় জলে বেড়েছে লবণাক্ততা ও ক্ষতিকর ভারী ধাতুর উপস্থিতি । জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আরও জানায় , ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে চলে পরীক্ষা । গত সপ্তাহ পর্যন্ত চলেছে কিছু নলকূপে পুনঃপরীক্ষা । সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান , বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রতি লিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম । আর বাংলাদেশ সরকারের নির্ধারিত সহনশীল মাত্রা হলো প্রতি লিটার ৫০ মাইক্রোগ্রাম । কিন্তু ফকিরহাটের অনেক নলকূপে আর্সেনিকের মাত্রা প্রতি লিটারে ৫০০ মাইক্রোগ্রাম পাওয়া গেছে , যা ওই পরীক্ষা উপকরণের ( কিড ) সর্বোচ্চ মাত্রা ! উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা জানান , এসব
নলকূপের পানি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নলকূপে লাল রং চিহ্নিত করে দিয়েছেন । ফলে ওসব পরিবার পানীয় জলের সংকটে পড়েছে । বিকল্প পানির ব্যবস্থা না থাকায় ক্ষতিকর জেনেও অনেক মানুষ এখনো সেই আর্সেনিকযুক্ত পানিই পান করছে । এতে ৬০-৭০ হাজার . . মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে । একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকা হিসেবে নলকূপ , পুকুর ও নদীর পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি এই সমস্যাকে আরও ঘনীভূত করেছে । সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী ফকিরহাটে ৪০ হাজার ৮৮৪ টি খানা ও জনসংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৩ জন । এই বিশাল জনগোষ্ঠীর পানীয় জলের সংকট নিরসনে সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এবং এলাকার সচেতন মহল । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের
আরএমও মোস্তাফিজুর রহমান বলেন , ‘ এই উপজেলায় ক্যানসার , চর্মরোগ , স্নায়বিক সমস্যা , যকৃৎ ও কিডনির জটিলতাজনিত অনেক রোগী রয়েছে । এসব রোগের সঙ্গে আর্সেনিকযুক্ত পানি পানের সম্পর্ক রয়েছে । তাই রোগের পেছনে আর্সেনিকের কারণ আছে কি না , তা গবেষণা করে দেখা উচিত । আর্সেনিকে সরাসরি মৃত্যু না হলেও পরোক্ষ মৃত্যুর হার অনেক বেশি । ” উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো . ছাব্বির হোসেন বলেন , “ অসহনীয় মাত্রায় আর্সেনিক ফকিরহাটে পানীয় জলের সংকটকে তীব্র করেছে । সচ্ছল মানুষ পানি কিনে খাচ্ছে । কিন্তু কম আয়ের মানুষ সমস্যায় পড়ছে । এ ছাড়া লবণাক্ততা ও পানিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতির বিষয়ে স্বতন্ত্র জরিপ করা প্রয়োজন । ' উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আইরিন বলেন , ‘ সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে । ”