
রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারে হাজী সেলিমের ক্রোকারিজ মার্কেট দখলকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (১০ মার্চ) বিকালে যুবদলের ইসহাক গ্রুপ এবং মিন্টু, নাহিদ, মইন গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
এছাড়াও একই দিন সন্ধ্যায় বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এরমধ্যে ছয়জন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহতরা হলেন রাব্বি (২০), আরমান (২৫), কারী মিজান (৪০), আলমগীর (৩০), আল আমিন (২৩) এবং রুবেল সিকদার (২০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। তিনি জানান, চকবাজার থানা ও কোতোয়ালি থানা এলাকায় পৃথকভাবে দুটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একটি চকবাজারে মার্কেটে চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে অন্যটি বাবুবাজার ব্রিজ এলাকায় কিশোর-যুবক বয়সীদের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে।
চকবাজারে মার্কেট দখলের ঘটনায় থানা ও স্থানীয়রা সূত্র জানায়, এক মাস আগে যুবদলের ইসহাক গ্রুপ বুড়িগঙ্গা বেড়িবাঁধ এলাকায় সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের এমটিসি ক্রোকারিজ মার্কেটটি দখল করে নেয়। এরপর থেকে মিন্টু, নাহিদ, হায়দার ও মইন গ্রুপ ওই মার্কেটটি তাদের দখলে নিতে চেষ্টা করে আসছিল। এই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকালে মার্কেটের ভেতরে ও বাইরে দুপক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। এসময়ে দু'পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
চকবাজার থানার ওসি শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, "হাজী সেলিমের মালিকানাধীন ‘এমটিসি’ মার্কেটের দখল নিয়ে তারা সংঘর্ষে জড়ায়। গোলাগুলির কথা শুনেছি; কিন্তু কারও গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাইনি।"
এদিকে এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা নেই জানিয়ে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, "দুই পক্ষের এখন পর্যন্ত ছয়জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। কয়েকজন বেশ আঘাত পেয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।"
অন্যদিকে সোমবার সন্ধ্যায় বাবুবাজার এলাকায় চাঁদাবাজি ও আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ছয়জন মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা রয়েছে। তাদের প্রত্যকের শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রে আঘাত রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় ইফতারের পর বাবুবাজার ব্রিজের নিচে এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক কিশোর ও যুবক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ জড়ায়। এসময় কয়েকজনকে গুলি ছুরতেও দেখা যায়। এতে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। তারা যুবদলের নেতা-কর্মী বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, "বাবুবাজার এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, এতে কয়েকজন আহত হন। তারা মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, "এক গ্রুপ চাঁদা তুলতে গেলে আরেক গ্রুপ বাধা দেয়। এ নিয়েই সংঘর্ষ। বিএনপির অঙ্গসংগঠনের দুই পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা বলে জানা গেছে।"
এ বিষয়ে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, "স্থানীয় কিছু লোকজন যাদের প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২২ বছর আধিপত্যকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায়৷ এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে কেউ গুলিবিদ্ধ নেই। আমরা হাসপাতালে গিয়ে তাদের প্রত্যেকে দেখেছি। সবাই ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন।"
ডিসি জসীম উদ্দিন আরও বলেন, "তারা কোনও দলের মতাদর্শ এ বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছে। অনেক কিছুই শোনা যাচ্ছে, তবে আরও তদন্ত পর বিস্তারিত বলা যাবে।"