
বাংলাদেশের কারাগারে বর্তমানে ৭০ হাজার ৬৫ জন বন্দি অবস্থান করছেন, যদিও দেশের কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৭৭ জনের। সম্প্রতি, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোতাহের হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "কারাগারে বন্দির সংখ্যা অত্যধিক হলেও আমরা নিয়মিত নজরদারি করছি। মোবাইল ফোন সম্পর্কিত অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে এবং আমরা নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এসব ডিভাইস শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।"
তিনি আরও জানান, কিছু বন্দি নিজের শরীরে মোবাইল ফোন লুকিয়ে নিয়ে আসার মতো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় এসব অবৈধ মোবাইল ফোন বাজারে বিক্রি হওয়া প্রতিরোধের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, কারাগারে বিশেষ বন্দীদের নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে কিছু বিশেষ বন্দী 'বাসার খাবার' খাচ্ছেন এবং 'রাজা-রাণীর মতো' আছেন, তা নিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোতাহের হোসেন দৃঢ়ভাবে বলেন, "আমি নিশ্চিত করতে পারি, কারাগারে কোনো বন্দী বাসার খাবার গ্রহণ করছেন না।"
তিনি আরো বলেন, "কারাগারের বিশেষ বন্দীদের মোবাইল ব্যবহারের বিষয়ে কিছু শঙ্কা থাকলেও, আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কারাগারে মোবাইল ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তবে, বন্দিরা আদালতে বা রিমান্ডে থাকলে আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকেন, সেখানে তারা মোবাইল ব্যবহার করতে পারেন।"
বর্তমানে, ৭০০ জনেরও বেশি বন্দি পালিয়ে রয়েছে, যাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এখনও ধরতে সক্ষম হয়নি। এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, "আমরা বন্দিদের আইডি ব্যবহার করে সাক্ষাৎকারের জন্য একটি অনলাইন সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছি, যাতে সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারণ এবং মোবাইল নোটিফিকেশন দ্বারা বন্দিরা নির্বিঘ্নে সাক্ষাৎ করতে পারেন।"
কারাগারে বন্দিদের মধ্যে বিশেষ শর্তে রাখা বন্দীদেরও পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। বর্তমানে, ১৫১ জন বন্দী ডিভিশনপ্রাপ্ত এবং এর মধ্যে সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারাও রয়েছেন। এর মধ্যে ৩০ জন সাবেক মন্ত্রী, ৩৮ জন সাবেক সংসদ সদস্য, ৭০ জন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৩ জন অন্যান্য ব্যক্তি রয়েছেন।
এছাড়া, তিনি বলেন, "কোনো বন্দী যদি ডিউয়ের বাইরে থাকে, তবে তাকে সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেওয়া হবে না এবং এই নিয়ম কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।"
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/dlMS4EDv_eY?si=Y6nm8lt5_vi5IhF9