Image description
ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমেছে

টানা ১০ মাস পর খাদ্যের মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর সর্বশেষ হিসাবে, গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ হয়েছে। গত বছরের মার্চের পর খাদ্যের মূল্যস্ফীতি আর ১ অঙ্কের ঘরে নামেনি। বিবিএস বলছে, শীতকালীন সবজি, মাছ-মাংসের দাম কমায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ কমেছে। এতে খাদ্য খাতে কিছুটা স্বস্তি নেমেছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। গতকাল বিবিএস মূল্যস্ফীতিসংক্রান্ত মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

বিবিএসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে; যা জানুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। এ ছাড়া আগের বছরের (২০২৪ সালের) ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

পাশাপাশি খাদ্য খাতে ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। যা জানুয়ারিতে ছিল ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ। এ মাসে সবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধসহ নিত্যপণ্যের দামে স্বস্তি মিলেছে। তবে খাদ্যবহির্ভূত খাতে ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশে; যা জানুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। বিবিএস জানায়, ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে আলু, চাল, ডাল, তেল, লবণ, মাছ, মাংস, সবজি ও মসলার দাম কমেছে। ফলে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি কমেছে; যার প্রভাবে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে। অর্থনীতির ভাষায়, মূল্যস্ফীতি এক ধরনের করের মতো। ধরুন, আপনার প্রতি মাসে আয়ের পুরোটাই সংসার চালাতে খরচ হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ জিনিসপত্রের দাম বাড়লে এবং সে অনুযায়ী আপনার আয় না বাড়লে আপনাকে ধারদেনা করে সংসার চালাতে হবে কিংবা খাবার, কাপড়চোপড়, যাতায়াতসহ বিভিন্ন খাতে কাটছাঁট করতে হবে। মূল্যস্ফীতির চেয়ে মজুরি বৃদ্ধি বা আয় বৃদ্ধি কম হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ে।

প্রকৃত আয় কমে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে যদি আপনার বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও সেবা কিনে সংসারের খরচ চালাতে ১০০ টাকা খরচ হয়ে থাকে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে একই পণ্য ও সেবা কিনে সংসার চালাতে খরচ হয়েছে ১০৯ টাকা ৩২ পয়সা। এর অর্থ হলো প্রতি ১০০ টাকায় খরচ বেড়েছে ৯ টাকা ৩২ পয়সা। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এনবিআরও তেল, আলু, পিঁয়াজ, ডিমসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যে শুল্ক-কর কমিয়ে দেয়। বাজারে নিত্যপণ্যের আমদানিপ্রবাহ ঠিক রাখার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে শীতকালীন সবজি বাজারে আসে। সব মিলিয়ে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কমে আসে। সে ধারাবাহিকতা চলতি মার্চেও (রমজান) চলমান রয়েছে।