
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
পরিস্থিতি শান্ত না হলে ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসে স্মরণকালের সর্বোচ্চ হতাহতের শঙ্কার কথা জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেছেন, নিজের ভাইদের যখন দেখি একে অন্যের রক্তের নেশায় মাতে, হতাশ লাগে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে এ উদ্বেগ-হতাশা প্রকাশ করেন আসিফ নজরুল।
আইন উপদেষ্টা লেখেন, আওয়ামী আমলে লীগের সঙ্গে অন্য যেকোনো দল বা পক্ষের সংঘর্ষ ঘটলে সেখানে পুলিশ-প্রশাসন নির্লজ্জভাবে লীগের পক্ষে থাকতো। ফলে খুব দ্রুতই অপর পক্ষ রনে ভঙ্গ দিত। কিন্তু বর্তমানে পুলিশ-প্রশাসন বিভক্ত, কোনো রাজনৈতিক দলের একক দৌরাত্ম্য নেই আপাতত, ডেডিকেটেড মারমুখী কর্মীসংখ্যা কাছাকাছি পরিমাণের। সব মিলিয়ে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির যদি এই মুহূর্তে মুখোমুখি হয়, নিশ্চিতভাবে বলা যায় কোনো পক্ষই সহজে পেছাবে না। উভয়ই নিজের অস্তিত্বের লড়াই জ্ঞান করে মারামারি করবে। হয়তো, ছাত্ররাজনীতির ইতিহাসে স্মরণকালের সর্বোচ্চ হতাহত ও লাশ দেখতে হবে এবার।
তিনি এরপর লেখেন, অত্যন্ত ফ্রাস্টেটিং লাগে এসব দেখে। ভয় জিনিসটা কখনো আমি ফিল করিনি কোনো ব্যাপারে, জেদের কারণে নাকি আমার মাথায় সমস্যা জানি না, যেকোনো হুমকিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি সবসময়। কিন্তু নিজের ভাইদের যখন দেখি একে অন্যের রক্তের নেশায় মাতে, তখন সত্যিকারের ভয় লাগে, আতঙ্ক লাগে, সবচেয়ে বেশি হতাশ লাগে।
উপদেষ্টা লেখেন, এখানে যে পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হোক, সে তো আমার ভাই-ই, ৬ মাস আগেও একসঙ্গে টিয়ারগ্যাস রাবার বুলেট খেয়েছি। এখন এসে তাদের মধ্যে হওয়া গ্যাঞ্জাম কোনোভাবেই বিন্দুমাত্র সুখকর হতেই পারে না। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির যেভাবে নিজ নিজ অফিশিয়াল প্যাডে একে অন্যের নাম উল্লেখ করে দায় আরোপ ও হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, এটা খুব খারাপ ভবিষ্যতই ইঙ্গিত করছে সামনে। আমার মনে হয়, এদের প্যারেন্ট সংগঠনের সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলা অতি জরুরি এবং একান্ত অপরিহার্য। আল্লাহ সবাইকে হিফাজত করুক, সঠিক জ্ঞান-বুঝ দিক। আমিন।