![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/12e3b8a63c879d3f701949e1049c599b.png)
আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘এ রকমই একেকটা আয়নাঘরে আমরা সতেরো কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ষোলো বছর। আর গোপনে বলতাম, আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচাইয়া দাও।’ বুধবার উপদেষ্টা ও নির্মাতা ফারুকী গুমের শিকার বন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে স্মরণ করে তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন।
যুগান্তরের পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো—
‘এ রকমই কোনো একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আটকে রাখা হয়েছিল। এ রকমই কোনো একটা ঘরে অজানা আশঙ্কায় সে কেঁপে কেঁপে উঠতেছিল। এই রকম একটা ঘরে বসেই হয়তো সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিল- আল্লাহ, তুমি আমারে এই বারের জন্য বাঁচাইয়া দাও। আমি আর রাজনীতি টাজনীতি করব না। আমার সন্তানের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও। আমার মায়ের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও।’
‘এ রকমই একেকটা ঘরে আমরা সতেরো কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ষোলো বছর। আর গোপনে বলতাম, আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচাইয়া দাও।’
সুমনের সঙ্গে আমার শেষ কথা হয় উত্তরার এক হাসপাতালে লুকাইয়া থাকা অবস্থায়। ওর ভাগনে আবরারের একটা শুট ছিল আমার সঙ্গে। স্পষ্ট মনে আছে ওর শেষ কথা, ‘দোস্ত, আবরাররে তুই ইজি কইরা নিস। নাইলে অ্যাকটিং খারাপ করব’।
‘এমনই এক জালিমের শাসনে ছিলাম যে তোর জন্য, সুমন, একটা কথাও বলতে পারি নাই। পরে জানলাম মানুষরূপী জানোয়ার জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তোরে ইনজেকশন দিয়ে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। যে বাবার ঘরে ফিরে সন্তানের সঙ্গে ভাত খাওয়ার কথা ছিল তাকে এই ডাইনির দল শীতলক্ষ্যার মাছেদের খাবারে পরিণত করে।’
‘এই হায়েনাদের হয়ে যখন কেউ কথা বলতে আসে, আমার মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমি আমার কমপোজার লুজ করি।’
আজ বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শনে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ড. ইউনূস বলেন, আপনারা সবাই সঙ্গে ছিলেন, কাজেই আমার নতুন করে কিছু বলতে হবে না। এটার বর্ণনা যদি বলতে হয়, তাহলে বলব এটা বীভৎস দৃশ্য। যারা নিগৃহীত হয়েছে, যারা এটার শিকার হয়েছে তারা আমাদের সঙ্গেই আছেন, তাদের মুখের থেকেই শুনলাম কী হয়েছে। এটার কোনো ব্যাখ্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, এরকম টর্চার সেলের সংস্করণ সারা বাংলাদেশ জুড়ে নাকি আছে। কেউ বলে ৮০০, কেউ বলে ৯০০। গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত প্রতিষ্ঠা করে গেছে সর্বক্ষেত্রে, এটা তার একটা নমুনা।