অন্ধত্ব আর হয়তো স্থায়ী নয়—এমন আশার আলো জ্বালাল অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীদের এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। তারা তৈরি করেছেন বিশ্বের প্রথম বায়োনিক চোখ, যা সম্পূর্ণ অন্ধ মানুষকেও ফেরাতে পারে দৃষ্টিশক্তি।
‘জেনারিস (Gennaris)’ নামের এই চিকিৎসা-প্রযুক্তি চোখের ক্ষতিগ্রস্ত অপটিক নার্ভ এড়িয়ে সরাসরি মস্তিষ্কে ভিজ্যুয়াল সিগন্যাল পাঠায়। ফলে যারা আঘাত বা রোগে সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে গেছেন, তারাও আবার দেখতে পাচ্ছেন আলো, ছায়া, এমনকি চারপাশের নড়াচড়া।
প্রচলিত রেটিনাল ইমপ্ল্যান্ট যেখানে কেবল আংশিক কার্যকর চোখের জন্য কাজ করে, সেখানে ‘জেনারিস’ একেবারে নতুন পদ্ধতিতে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়। এতে একটি ক্ষুদ্র ব্রেইন ইমপ্লান্ট থাকে, যা বিশেষ চশমার সঙ্গে থাকা ক্যামেরার সঙ্গে যুক্ত। ক্যামেরাটি দৃশ্য সংগ্রহ করে তা নিউরাল সিগনালে রূপান্তরিত করে মস্তিষ্কের ভিজ্যুয়াল কর্টেক্সে থাকা মাইক্রোইলেকট্রোডে পাঠায়। এরপর মস্তিষ্ক সেই সিগনালগুলোকে ছবিতে রূপান্তর করে, ঠিক যেমন চোখ দেখে।
প্রাথমিক পরীক্ষায় ফলাফল ছিল অভূতপূর্ব—অন্ধ রোগীরা আকার, নড়াচড়া এমনকি আশপাশের পরিবেশ বুঝতে সক্ষম হয়েছেন এবং নিজেরাই হাঁটাচলা করেছেন। গবেষকরা আশাবাদী, প্রযুক্তিটি আরও উন্নত হলে ব্যবহারকারীরা লেখা পড়া ও মুখ চিনতেও সক্ষম হবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উদ্ভাবন নিউরোসায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সংমিশ্রণে মানবদেহের হারানো সক্ষমতা ফিরিয়ে আনার এক ঐতিহাসিক সাফল্য। আগামী এক দশকের মধ্যেই এটি সারা বিশ্বের রোগীদের জন্য উন্মুক্ত হতে পারে—যে ভবিষ্যতে অন্ধত্ব হয়তো আর চিরস্থায়ী থাকবে না।