Image description

ইসরাইলের সঙ্গে গুগল ও অ্যামাজনের ১.২ বিলিয়ন ডলারের ক্লাউড-কম্পিউটিং চুক্তি, ‘প্রজেক্ট নিম্বাস’, নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান জানায়, এই চুক্তির আওতায় ইসরায়েল এমন একটি গোপন ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে কোম্পানিগুলো সংকেত পাঠিয়ে জানাতে পারবে— কোনো বিদেশি দেশ তাদের কাছে ইসরায়েলি ডেটা চেয়েছে।

ফাঁস হওয়া ইসরায়েলি অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, বিদেশে ডেটা হস্তান্তরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ইসরাইলকে পাঠাতে হবে। অর্থের পরিমাণ নির্ধারিত হবে সেই দেশের টেলিফোন ডায়ালিং কোড অনুযায়ী— যেমন যুক্তরাষ্ট্রের কোড +১ হলে ১,০০০ শেকেল, ইতালির কোড +৩৯ হলে ৩,৯০০ শেকেল। আর যদি কোনো গ্যাগ অর্ডারের কারণে দেশটির নাম প্রকাশ করা না যায়, তবে দিতে হবে ১ লাখ শেকেল।

অর্থপ্রদানের এই কাজটি কেবল অর্থ দেওয়া নয় বরং এটি একটি কোডেড সংকেত। অর্থাৎ কোন দেশের কাছে ডেটা গিয়েছে তা চুপচাপ জানিয়ে দেওয়া। এভাবে ইসরাইল জানতে পারবে কখন এবং কোথায় তার নাগরিক/সরকারি ডেটা বিদেশি সংস্থার হাতে গিয়েছে।

চুক্তিতে আরো বলা হয়েছে, ইসরাইলি সরকার, সেনাবাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থা গুগল ও অ্যামাজনের ক্লাউড পরিষেবা যেভাবে ব্যবহার করবে, তা সীমিত করতে পারবে না। অর্থাৎ, ডেটা সংরক্ষণ বা তথ্য ব্যবহারে কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।

গুগল ও অ্যামাজন উভয়ই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গুগল জানিয়েছে, তারা কোনো অবৈধ কার্যকলাপে জড়িত নয়, আর অ্যামাজন বলেছে, ডেটা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে তাদের ‘কঠোর বৈশ্বিক প্রক্রিয়া’ আছে। ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয়ও দাবি করেছে, কোম্পানিগুলোকে আইন লঙ্ঘনে বাধ্য করা হয়নি।

তবে ফাঁস হওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ইসরাইল প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে বৈশ্বিক নজরদারি ও তথ্য নিয়ন্ত্রণের নতুন এক অধ্যায় শুরু করেছে।

এর আগে গত বছর মাইক্রোসফট অবৈধ নজরদারি কার্যক্রমে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা প্রকাশের পর তাদের ক্লাউড অ্যাকসেস বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু ‘নিম্বাস’ চুক্তিতে গুগল ও অ্যামাজন এমনভাবে প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ যে, তারা কোনো অবস্থাতেই ইসরাইলের অ্যাকসেস সীমিত করবে না।