Image description

আফগানিস্তানের শাসক তালেবান সরকারের এক প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। মঙ্গলবার আফগান মাটিতে বিদেশি সেনা উপস্থিতির বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছে দেশটি।

সফরটি এমন সময়ে হল, যখন গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনর্দখলের প্রস্তাব দেয়, যা তালেবান সরকার প্রত্যাখ্যান করে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো বাহিনীর বিশৃঙ্খল প্রত্যাহারের পর থেকেই ওই ঘাঁটিটি তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়াহ

মস্কোতে আফগানিস্তানবিষয়ক এক আন্তর্জাতিক বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তব্যে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ তালেবান সরকারের প্রশংসা করে বলেন, তারা দেশটিতে আইএস ও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়ছে এবং অবৈধ মাদক উৎপাদন বন্ধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘যে কোনো অজুহাতে আফগানিস্তান বা তার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মাটিতে তৃতীয় কোনো দেশের সামরিক অবকাঠামো স্থাপন সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।’

ল্যাভরভ বলেন, ‘আফগানিস্তানের ইতিহাসে বহুবার বিদেশি সেনা উপস্থিতির ঘটনা ঘটেছে, যা শেষ পর্যন্ত কেবল অস্থিতিশীলতা ও সংঘাত বাড়িয়েছে। এখন সময় এসেছে সেসব থেকে শিক্ষা নেওয়ার।’

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে যুদ্ধ করে এবং শেষ পর্যন্ত সেনা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়।

২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে তারা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও দেশটিতে কঠোর ইসলামি আইন কার্যকর রাখছে।

চলতি বছরের জুলাইয়ে রাশিয়া প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয় এবং তাদের নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহার করে।

মঙ্গলবারের আলোচনায় ল্যাভরভ বলেন, রাশিয়া আফগানিস্তানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা এবং মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশীদারিত্ব বাড়াতে আগ্রহী। তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে বলেন, তারা ‘শত্রুতাপূর্ণ নীতি’ অবলম্বন করছে এবং কাবুলের সম্পদ ও তহবিল জব্দ করে রেখেছে।

আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি রাশিয়ার এই স্বীকৃতিকে ‘সাহসী পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি রাশিয়ান ফেডারেশনের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই এবং আশা করি অন্যান্য দেশও একই পথে হাঁটবে।’

তিনি বলেন, মস্কো বৈঠকটি আঞ্চলিক দেশগুলোর জন্য পরস্পরের মতামত বিনিময়ের সুযোগ তৈরি করেছে। তার ভাষায়, ‘আমরা এখন এমন একটি নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করেছি, যা বিনিয়োগ, অর্থনীতি, ট্রানজিট ও আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির জন্য সহায়ক।’

মঙ্গলবারের আলোচনায় চীন, ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।