Image description

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি ‘কয়েক দিনের মধ্যে বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে’ চূড়ান্ত হতে পারে জানিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

বুধবার ইসরাইলি প্রচার মাধ্যম চ্যানেল ১২ এবং ইয়েদিওথ আহরোনথসহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম তার এই মন্তব্য প্রকাশ করেছে।

গাজায় হামাসের হাতে থাকা ইসরাইলি বন্দিদের পরিবারের সঙ্গে মঙ্গলবার এক বৈঠকের পর নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি দীর্ঘমেয়াদী অস্ত্রবিরতিতে প্রস্তুত। তবে শর্ত হলো- সব অপহৃতদের ফেরত দিতে হবে’।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এটা কয়েক দিনের বা কয়েক ঘণ্টার ব্যাপার। আমরা হামাসের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি। জবাব পেলে সঙ্গে সঙ্গেই এটা শুরু করতে পারব’।

নেতানিয়াহু অবশ্য যুদ্ধবিরতির আগের প্রস্তাবগুলো প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তবে এবারে সর্বমুখি চাপে পড়ে হামাসের সঙ্গে চুক্তি কার্যকরে রীতিমত মরিয়া হয়ে উঠেছেন। 

তিনি এদিন পুনরায় উল্লেখ করেন যে, এই চুক্তির অগ্রগতি সম্পূর্ণরূপে হামাসের প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করছে।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী সেই সঙ্গে সতর্ক করে বলেন, ‘অস্ত্রবিরতির যেকোনোরকম লঙ্ঘন কঠোর এবং শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে। আর তা হবে এমন এক ধরনের যুদ্ধ, যা আগে দেখা যায়নি’।

ইসরাইলি চ্যানেল ১২ জানায়, এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার নেতানিয়াহু তার দেশের জরুরি নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ বৈঠক করবেন।

এর আগে, হামাস জানিয়েছিল যে, গাজায় অস্ত্রবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ রয়েছে।

মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার জানিয়েছে, গাজার অস্ত্রবিরতি আলোচনা একেবারেই ‘শেষ পর্যায়ে’ এবং চুক্তির ঘোষণা অতি ‘নিকটবর্তী’।

জানা গেছে, ইসরাইল বর্তমানে ১০,৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে আটকে রেখেছে। অন্যদিকে অনুমান করা হয় যে, ৯৮ জন ইসরাইলি গাজায় হামাসের হাতে আটক রয়েছে।

হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ইসরাইলি বাহিনীর বোমা হামলায় বহু ইসরাইলি বন্দি নিহত হয়েছেন।

মূলত কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এই বন্দি বিনিময় ও অস্ত্রবিরতি আলোচনা। যদিও নেতানিয়াহুর নতুন শর্ত আরোপের কারণে এটি বেশ কয়েকবার ব্যাহত হয়েছে।

ইসরাইলের বিরোধী দল এবং বন্দিদের পরিবারও নেতানিয়াহুকেই গাজার অস্ত্রবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি বাধাগ্রস্ত করার জন্য অভিযুক্ত করে আসছে।

প্রসঙ্গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজায় গণহত্যামূলক আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। যাতে এ পর্যন্ত ৪৬,৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানায়। তা সত্ত্বেও দখলদার ইসরাইল ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে এই আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

এছাড়াও ইসরাইল গাজায় সংঘটিত আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার সম্মুখীন। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি