Image description

পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক সভায় মঙ্গলবার তীব্র ভাষায় ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, ভোট সামনে এলেই বিজেপি নানা কৌশল নেয়—কখনও এনআরসি, কখনও নাগরিক তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়ার মতো উদ্যোগ। এ প্রসঙ্গে তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বলেন, “আমি নির্বাচন কমিশনকে সম্মান করি, কিন্তু অনুরোধ করবো বিজেপির ললিপপ হবেন না।”

মমতা অভিযোগ করেন, সম্প্রতি বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে সাধারণ মানুষের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তার ভাষায়, ‘এটা আসলে এনআরসির মতোই এক চক্রান্ত। কমিশন যদি রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে, সাধারণ মানুষ তা কোনোদিন মেনে নেবে না।’

ভাষা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘আজ যদি মানুষ বাংলায় কথা বলে, তাদের হোটেল দেওয়া হয় না, চাকরি দেওয়া হয় না, পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া হয় না। আমরা বাংলায় কথা বলব। বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের ভাষা যদি এক হয়, আমি কি করতে পারি? বাংলাদেশ তো আর আমি তৈরি করিনি।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সরাসরি আক্রমণ করে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গকে অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত করছে। তার অভিযোগ, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারের সম্মান করি, কিন্তু তাকেও আমাদের চেয়ারের সম্মান করতে হবে। কেন তিনি বলেন বাংলায় চোর আছে তাই টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন? উত্তরপ্রদেশ বড় চোর, মহারাষ্ট্র-বিহারও ছোট নয়।’

এর আগে চলতি জুলাই মাসের শেষে বোলপুরের সভা থেকেও মমতা একই অভিযোগ করেছিলেন। সেসময় তিনি বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন বিজেপির এজেন্টে পরিণত হয়েছে।

কলকাতার গণমাধ্যম বিশ্লেষণ করছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের কৌশলই আসলে এই বক্তব্যগুলোর পেছনে কাজ করছে। বিজেপির নাগরিকত্বকেন্দ্রিক রাজনীতিকে প্রতিহত করতেই মমতা আবারও ভোটার তালিকা ও এনআরসি ইস্যু সামনে টানছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ভাষা ও সংস্কৃতির প্রশ্ন সবসময় প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় মমতার বক্তব্য তীব্র প্রতিধ্বনি তুলতে পারে। তবে বিজেপি এখনো তার মন্তব্যের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।