
বিজেপির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করা দক্ষিণী সিনেমার অভিনেতা এবং রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেত্রি কাজাগাম (টিভিকে) প্রধান থালাপতি বিজয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রতি এক সমাবেশের মঞ্চে ভক্তের সঙ্গে তার দেহরক্ষীর দুর্ব্যবহারের অভিযোগে মামলাটি করা হয়।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। তামিলনাড়ু রাজ্যের পেরাম্বলুর জেলা পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট অফিসে শরৎকুমার অভিযোগটি দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় বিজয় এবং তার নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে রাজনৈতিক দল টিভিকে প্রতিষ্ঠা করা থালাপতি, তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে যখন নিজেকে একজন বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছেন তখন এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই মাসের শুরুতে তিনি ঘোষণা করেন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাদুরাই পূর্ব থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। এটি ক্ষমতাসীন দ্রাবিড় মুন্নেত্র কাজগমের (ডিএমকে) বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তার সবচেয়ে সরাসরি লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
মাদুরাইতে দলের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলনে, ডিএমকে-র ওপর তীব্র আক্রমণ শুরু করেন বিজয়। এটিকে তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বলে অভিহিত করেন এবং ভারতীয় জনতা পার্টিকে টিভিকে-র ‘একমাত্র আদর্শিক শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
হাজার হাজার সমর্থকের সামনে জোরে জোরে চিৎকার করে থালাপতি ঘোষণা করেন, ‘টিভিকে কোনও রাজনৈতিক খেলা নয়; এটি একটি আদর্শ। এটি প্রচারের জন্য কোনো বক্তৃতা নয়। এটি ক্ষমতায় থাকাদের জন্য একটি সতর্কীকরণ। টিভিকে এখানে আধিপত্য বিস্তার করতে এসেছে। কোটি কোটি মানুষ আমাদের সাথে আছেন। ২০২৬ সালের নির্বাচন টিভিকে এবং ডিএমকে-র মধ্যে লড়াই।’
বিজয় টিভিকে একটি পরিষ্কার, আপসহীন শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘টিভিকে এমন কোনও দল নয় যারা গোপনে চুক্তি করে, জোট তৈরি করে এবং জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে। আমরা কাউকে ভয় পাই না। তামিলনাড়ুর জনগণ, নারী ও যুবসমাজ আমাদের সাথে দাঁড়িয়ে আছে।’
সমাবেশে তিনি শ্রীলঙ্কা থেকে কাচাথিভু দ্বীপ মুক্ত করার এবং তামিলনাড়ুর জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন, যা রাজ্যের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক দাবি।
তার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলি বিপুল জনসমাগম ঘটিয়েছে, যা রূপালী পর্দার বাইরেও তার জনপ্রিয়তাকে তুলে ধরেছে। মাদুরাইয়ের সমাবেশকে টিভিকে-র সবচেয়ে বড় সমাবেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল, যেন এটি ১৯৬৭ এবং ১৯৭৭ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনের প্রতিধ্বনি।
অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত এই ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের ডিএমকে সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায়, তিনি চেন্নাইতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের গ্রেপ্তারকে ‘ফ্যাসিবাদী’ এবং ‘অমানবিক’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।