
বিশ্বে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে উল্টো বিপাকে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাঁচ মাস আগে ২ এপ্রিল ওই যুদ্ধের সূচনা করেন তিনি। ভেবেছিলেন বাণিজ্যে ভারসাম্য আনবেন। তবে ওয়াশিংটনের এমন নীতি রাজনৈতিকভাবে অনেকটা বুমেরাং হয়েছে।
বিশেষ করে তথাকথিত গ্লোবাল সাউথকে টার্গেট করে ওয়াশিংটন একা হয়ে পড়েছে বিশ্ব মঞ্চে। বিপরীতে চীনের কাছ থেকে দেশগুলোকে দূরে রাখতে চাইলেও এখন বেইজিংই হয়ে উঠেছে, গ্লোবাল সাউথের ত্রাণকর্তা!
গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ দুই দেশ ভারত ও ব্রাজিল। তারা ওয়াশিংটনের ওই যুদ্ধের বিরুদ্ধে বলা যেতে পারে, পাল্টা যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কাছে ঘেঁষতে শুরু করেছে বেইজিংয়ের। এই তিন দেশই আবার ব্রিকসের অংশীদার। অ-পশ্চিমাদের এই জোটে মূল সদস্য হচ্ছে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে বিশ্বের অন্য দেশগুলোও এই জোটে ঢোকার জন্য মরিয়া।
ট্রাম্প গেল জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসের অধিকর্তা হন। এরপর থেকেই মিত্রদের বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ শুরু করেন। সর্বশেষ দেশটির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ করেন ট্রাম্প। উদ্দেশ্য ভারতকে রাশিয়ার তেল কেনা থেকে বিরত রাখা। তবে এতে হিতেবিপরীত হয়েছে। রাশিয়া ছাড়াও চীনের দিকে ঝুঁকেছে ভারত।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন। এ মাসেই চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে মোদির। সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন-এসসিও-তে দেখা হবে উভয় নেতার। এটিও বহুজাতিক অ-পশ্চিমা গ্রুপ। এখন চীন-ভারত সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করায় সেটিকে স্বাগত জানিয়েছেন ওয়াং ই।
অবশ্য ভারতে চীনের রাষ্ট্রদূত শু ফেইহং বলেছেন, ওয়াশিংটনের আরোপ করা এই শুল্কের দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করে বেইজিং। শুধু তাই নয় বেইজিং-নয়াদিল্লির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি। তার ভাষায়, চুপ থাকলে হয়রানিকারী শক্তিশালী হয়। নয়াদিল্লির জন্য সবচেয়ে বড় অস্বস্তি হচ্ছে, চীনও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি করে। কিন্তু চীনকে আপাতত ছাড় দিয়েছেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নাটকীয়ভাবে সম্পর্কের অবনতি ঘটায় নিজের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে মস্কো পাঠান মোদি। সেখানে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উভয় নেতা একমত হন, ট্রাম্পকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে আলাস্কায় পুতিনকে ট্রাম্প যেভাবে অর্ভ্যথনা জানিয়েছেন, আবার চীনের প্রতি ছাড়ের নীতি নিয়েছেন, তাতে পুরো গ্লোবাল সাউথও হতভম্ব হয়ে গেছে।