
ইসরাইলের উগ্র ডানপন্থি রাজনীতিকদের ফিলিস্তিনি বিরোধী অবস্থান এবং সহিংসতায় উসকানিমূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে এবার কঠোর অবস্থান নিয়েছে পাঁচটি পশ্চিমা দেশ। তারা একযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরাইলের দুই ক্ষমতাধর মন্ত্রীর বিরুদ্ধে, যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ।
মঙ্গলবার (১০ জুন) কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে ঘোষণা করে যে, তারা ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গিভর এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেছেÑএই দুই মন্ত্রী পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহিংসতা উসকে দিচ্ছেন, জবরদস্তি উচ্ছেদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে নতুন ইহুদি বসতি গড়ার পক্ষে প্রকাশ্যে সাফাই দিচ্ছেন। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলোÑপশ্চিম তীরে চলমান উগ্রতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া।
ইতামার বেন-গিভর এবং বেজালেল স্মোতরিচ বর্তমানে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। বেন-গিভরের অধীনে রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এবং স্মোতরিচ অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এই দুই নেতা দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থানের জন্য পরিচিত। মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও নরওয়ে জানায়Ñ“এই দুই ব্যক্তি পশ্চিম তীরে সহিংসতা ছড়ানোর ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তারা প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদকে বৈধতা দিচ্ছেন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তাদের আচরণ ভয়ঙ্কর, অগ্রহণযোগ্য এবং বিপজ্জনক।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “তারা শুধু নিজেরাই উস্কানি দিচ্ছেন না, বরং ইসরাইল সরকারকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ ও বসতি স্থাপনে সরাসরি জড়িত করে তুলছেন। একইসঙ্গে সহিংসতায় জড়িতদের দায়মুক্তি দিতেও সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছেন।”
এই ৫ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে ইসরাইলকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছেÑপশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজ করতে হবে। তারা আরও উল্লেখ করে, “আমরা পশ্চিম তীরে সব ধরনের উগ্রপন্থা, সহিংসতা ও সাম্প্রদায়িক হামলার অবসান চাই। এসব কার্যক্রম শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, বরং পুরো অঞ্চলকেই অস্থিতিশীল করে তুলছে।” বিবৃতিতে গাজার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ জানানো হয়েছে। বলা হয়, “যদিও আজকের বিবৃতির মূল ফোকাস পশ্চিম তীর, তবে আমরা গাজার মানবিক বিপর্যয় ভুলে যাইনি। গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে গাজায় যে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে, সেখানে এই দুই মন্ত্রী সরাসরি জড়িত। ইসরাইল যদি গাজার ফিলিস্তিনিদের জোর করে পশ্চিম তীরে সরিয়ে নিয়ে গাজা পুরোপুরি দখলের চেষ্টা করে, তবে তা আমরা কোনোভাবেই মেনে নেব না।” সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস।