
ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাতে তিনটি রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ফরাসি যুদ্ধবিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান দাসো এভিয়েশন। বিশ্বের অন্যতম আধুনিক যুদ্ধবিমান রাফালকে ভূপাতিত করতে পারায় পাকিস্তানি বিমানবাহিনীর সক্ষমতা যেমন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির ওপর, তেমনি এই ঘটনায় ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে দাসো এভিয়েশন।
১৯২৯ সালে প্রতিষ্ঠিত দাসো এভিয়েশন বিশ্বের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত। প্রতিষ্ঠানটি রাফাল, মিরাজসহ একাধিক ৪.৫, তৃতীয় ও দ্বিতীয় প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করে থাকে। বর্তমানে মনুষ্যবিহীন ফাইটার ড্রোন "নিউরন" প্রকল্প নিয়েও কাজ করছে কোম্পানিটি।
ভূপাতিত রাফাল: রাফালের গর্বিত পরিসংখ্যান মুখ থুবড়ে পড়ল?
প্রতিটি রাফাল ফাইটার জেটের বাজারমূল্য প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলার। শব্দের চেয়ে ১.৮ গুণ দ্রুতগামী এই যুদ্ধবিমান ৫০,০০০ ফুট উচ্চতায় কাজ করতে সক্ষম। একইসঙ্গে ১৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে ৪০টি লক্ষ্যবস্তু একযোগে শনাক্ত করার প্রযুক্তিও রয়েছে এতে।
তবে এতসব আধুনিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও ভারতের তিনটি রাফাল বিমান পাকিস্তানের হাতে ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ আর হতাশা উভয়ই দেখা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। বিশেষ করে ভারতীয় প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল বিনিয়োগের পরেও এমন পরিণতি হতবাক করেছে বিশ্লেষকদের।
শেয়ারবাজারে পতন: বড় ধস দাসো এভিয়েশনের বাজারমূল্যে
এই ঘটনায় দাসো এভিয়েশনের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস দেখা গেছে। মাত্র পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য ১০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সোমবারই ইউরোপীয় শেয়ারবাজারে দাসোর শেয়ারের দাম ৭ শতাংশের বেশি পড়ে যায়।
প্যারিস স্টক এক্সচেঞ্জে এর শেয়ার দর একদিনেই নেমে এসেছে ২৯২ ডলারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দর আরও কমে গিয়ে ২৬০ ইউরোতে গিয়ে ঠেকতে পারে। ফলে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের মাঝে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে, এবং অনেকেই এখন শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, গত পাঁচ বছরেই দাসো এভিয়েশনের শেয়ারের দাম বেড়েছিল ৩৪৭ শতাংশের বেশি। গেল বছর কোম্পানিটি ৬.২৪ বিলিয়ন ইউরো বিক্রি এবং ৯২৪ মিলিয়ন ইউরো নিট মুনাফা করেছিল।
চীনা জেটের উত্থান: পাল্টা বাজার জয় চেংডু এয়ারক্রাফটের
রাফালের বিপরীতে চীনের তৈরি যুদ্ধবিমান সি-মডেলের উত্থান এখন বাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। পাকিস্তানের হাতে রাফাল ভূপাতিত করার পেছনে চীনের চেংডু এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন নির্মিত ফাইটার জেটের ভূমিকা রয়েছে বলে সামরিক বিশ্লেষকদের মত।
এই খবরে চেংডুর শেয়ার মূল্য এক লাফে ১৭ শতাংশ বেড়ে যায়। সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার দর দাঁড়ায় ৭১.৮ ইউয়ান, যা পূর্বের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি।