Image description
 

বাংলাদেশে আশ্রিত প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গা এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে চলতি বছর সহায়তা দেওয়ার জন্য দাতাদের কাছে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের তহবিল চেয়েছে জাতিসংঘ। সোমবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ এ অর্থ দেওয়ার আহ্বান জানায়। খবর এএফপির। 

বিবৃতিতে জানানো হয়, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ এবং শতাধিক অংশীদার মিলে দুই বছর মেয়াদি ‘২০২৫-২০২৬ যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি)’ শুরু করেছে। এমন একটি সময়ে এ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, যখন রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার অর্থ ক্রমশ কমছে।

জাতিসংঘের আহ্বানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আশ্রিত প্রায় ১৪ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য জেআরপির প্রথম বছর ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর দমন–পীড়নের মুখে ২০১৭ সালে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তখন থেকে তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে থাকছে। তারা মোটাদাগে আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

 

জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়, অষ্টম বছরে এসে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট বড় মাত্রায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে।

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থার প্রধান অ্যামি পোপ জেনেভায় রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সংস্থা হিসেবে আমাদের যদি (বাজেট) কাটছাঁটের মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে রোহিঙ্গারা খেতে পারবে না, তারা সুরক্ষা পাবে না, অথবা তাদের জীবনরক্ষাকারী একান্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকবে না।

তহবিল–সংকটের কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাবারের বরাদ্দ (রেশন) আগামী এপ্রিল মাস থেকে সাড়ে ১২ ডলার থেকে ৬ ডলারে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) লিখিতভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য খাবারের বরাদ্দ অর্ধেকের বেশি কমানোর পরিকল্পনার কথা বাংলাদেশকে জানিয়েছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের মাসিক খাবারের বরাদ্দ অর্ধেক কমানোর পরিকল্পনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ১৪ মার্চ এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছে, বরাদ্দ অর্ধেক কমলে রোহিঙ্গাদের ওপর এর প্রভাব হবে ভয়াবহ। এ পরিস্থিতি এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে হবে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ১৪ মার্চ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের পাশে থাকার ঘোষণা দেন। ওই সফরে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেন।