
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরবে বিপুল সংখ্যক মানুষ। ইতোমধ্যে যানবাহনের ওপর বেড়েছে চাপ, বেড়েছে পরিবহনের ভাড়াও। বরাবরের মতো এবারও আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পুরোনো ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি মেরামতের হিড়িক পড়েছে। যাত্রীরচাপ সামাল দিতে প্রস্তুত করা হচ্ছে লক্কড়ঝক্কড় গাড়িগুলো। রাজধানীসহ ঢাকার বাইরেও ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলো রং-চং করে রাস্তায় নামানোর প্রস্তুতি চলছে। পুরাতন এসব গাড়িকে নতুন রূপ দিতে মেকানিক ও ওয়ার্কশপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। এই গাড়িগুলো নিরাপত্তা ঝুঁকিকে সঙ্গী করেই ঈদের আগে রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটে যাবে। ফিটনেসবিহীন এসব গাড়ি রাস্তায় বিকল হয়ে তৈরি হয় যানজট। এতে ঘরমুখো মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে।
ফিটনেসবিহীন বাস মেরামত ও রং করে রাস্তায় নামানোর প্রবণতা রোধে অভিযান চালিয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। গতকাল রাজধানীর গাবতলীর বিভিন্ন ওয়ার্কশপ পরিদর্শন করে সংস্থার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের যৌথ দল। এ সময় চলমান মেরামতের বাসগুলোর নম্বর সংগ্রহ করে অনলাইনে ফিটনেস যাচাই করেন তারা। যেসব বাসের ফিটনেস নেই, সেগুলোর মেরামত শেষ হলেও ১৪ এপ্রিলের আগে ছাড়পত্র না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান
গণমাধ্যমকে জানান, ফিটনেসবিহীন বাস দূরপাল্লার সড়কে যাত্রী দুর্ভোগ ও যানজট সৃষ্টি করে। এটি প্রতিরোধে ওয়ার্কশপগুলোতে সচেতনতামূলক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। তিনি ওয়ার্কশপকর্মীদের সতর্ক করে বলেন, ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় নামলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঈদযাত্রায় আরেক আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন-করিমন ইত্যাদি। জানা গেছে, ৫ লাখ ইজিবাইক, ৬০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৭ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ১ লাখ নছিমন-করিমন প্রতিদিন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করছে। এসব যানবাহন দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের গতি কমানোর পাশাপাশি যানজটের সৃষ্টি করছে। এসব যানবাহন জাতীয় মহাসড়ক থেকে জরুরিভিত্তিতে উচ্ছেদ করতে হবে। সড়ক-মহাসড়ক দখলমুক্ত করে বাধাহীন যানবাহন চলাচলে উদ্যোগ নিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা, পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুর্ঘটনা, যানজট ও মানুষের ভোগান্তি কমাতে ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌপথে মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড়-ঝক্কড় যানবাহন বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বার্তায় বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান। তিনি বলেন, প্রতি বছর ঈদে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় বাস, ট্রাক, লেগুনা, টেম্পো, মাইক্রোবাস, কার, নছিমন-করিমন ও সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাস দূরপাল্লার বহরে যাত্রী পরিবহনে নেমে পড়ে। মেয়াদোত্তীর্ণ নৌযান দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করে। রেলপথেও মেয়াদোত্তীর্ণ কোচ, ইঞ্জিন, রেলপথের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা এবং লাইনচ্যুতির ঘটনায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি যানজট এবং ভোগান্তি তৈরি করে।