Image description
শহীদ হওয়ার আগে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকের আবেগঘন পোস্ট

হোসাম শাবেত। আল জাজিরার ফিলিস্তিনি সাংবাদিক। ইসরাইলের হামলায় মাত্র ২৩ বছর বয়সে শহীদ হলেন তিনি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের লড়াই-সংগ্রামে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িত  রেখেছিলেন। গাজায় ইসরাইলি বর্বরতা শুরুর পর থেকে ১৮ মাস ধরে এক অমানবিক জীবন কাটিয়েছেন নির্ভীক শাবেত। বার বার মৃত্যুর সম্মুখীন হয়েও এক মুহূর্তের জন্য দায়িত্ব থেকে পিছপা হননি তিনি। এক্সে দেয়া প্রতিটি পোস্টে তার ইসরাইলি হামলার মধ্যে নির্ভীক দায়িত্ব পালনের সাক্ষ্য বহন করছে। আল জাজিরা বলছে, এর আগেও তাকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। তাতে আহত হলেও গাজা ছেড়ে যাননি হোসাম শাবেত। যেকোনো সময় ইসরাইলের বোমার আঘাতে জীবনের ওপারে চলে যেতে পারেন জেনে এক্সে পোস্ট করেছিলেন তিনি। বিশ্বাস এবং সংগ্রামের প্রতি অবিচল থাকা সাহসী ওই সাংবাদিক লিখেছেন, ১৮ মাস ধরে আমার প্রতিটি মুহূর্ত আমার জনগণের জন্য ব্যয় করেছি। উত্তর গাজার বীভৎসতা আমি ডকুমেন্টেড করেছি যেন বিশ্ব জানতে পারে হায়েনারা কি লুকাতে চায়। আমি ফুটপাথে, স্কুলে, তাঁবুতে- যেখানে পেরেছি রাত কাটিয়েছি। প্রতিটি দিনই ছিল টিকে থাকার সংগ্রাম। মাসের পর মাস ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করেছি। তবু আমি জনগণের কাছ থেকে সরে যাইনি।

আরও লিখেছেন, আল্লাহর কসম! আমি সাংবাদিক হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করেছি। সত্য প্রকাশ করার স্বার্থে আমি সব রকমের ঝুঁকি নিয়েছি। এখন অবশেষে আমি বিশ্রামে যাচ্ছি- বিশ্রাম; যার সঙ্গে গত ১৮ মাস আমার পরিচয় নেই! এসব কিছু ফিলিস্তিনের স্বার্থেই করা হচ্ছে উল্লেখ করে শাবেত লিখেছেন, আমি এসব করেছি। কারণ আমি ফিলিস্তিনে বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি এই ভূমি আমাদের। এই ভূমিকে রক্ষা করা এবং মানুষের সেবা করার জন্য জীবন দেয়া আমার কাছে সর্বোচ্চ সম্মানের। আমি এখন আপনাদের বলি- গাজা নিয়ে কথা বলা বন্ধ করবেন না। বিশ্বের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে দিবেন না। যুদ্ধ অব্যাহত রাখুন। আমাদের কথা বলতে থাকুন- যতক্ষণ না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়। এদিকে সোমবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক মোহাম্মদ মনসুরও নিহত হয়েছেন। তার উপরও অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্যানুসারে দুই সাংবাদিকের হত্যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত সংবাদ কর্মীর সংখ্যা ২০৮ জনে দাঁড়িয়েছে।