Image description

এক তরুণীকে বিনা পারিশ্রমিকে দাসের মতো কাজ করতে বাধ্য করানোর অভিযোগে জাতিসংঘের এক নারী বিচারককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ক্রাউন আদালতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘের বিচারক হিসবে কাজ করা লিডিয়া মুগাম্বে উগান্ডার হাইকোর্টেরও বিচারক। ২০২২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সময় উগান্ডার এক তরুণীকে যুক্তরাজ্যে আনেন তিনি। এরপর মুগাম্বে ওই তরুণীকে দাস হিসেবে ঘরের কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই তরুণীকে বিনা পারিশ্রমিকে ঘরের কাজ করার পাশাপাশি বাচ্চার দেখাশোনাও করতে হতো। এমনকি তাকে ‘নির্যাতন’ করতেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উগান্ডা হাইকোর্টের বিচারক মুগাম্বেকে ২০২৩ সালে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। রুয়ান্ডা ও সাবেক যুগোস্লাভিয়ায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কিত ট্রাইব্যুনালে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর ক্যারোলিন হাউহে বিচারকদের জানান, লিডিয়া মুগাম্বে ভুক্তভোগীকে শ্রম শোষণ ও নির্যাতন করেছেন। যথাযথ বেতনের অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে এবং যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য সম্পর্কে না জানিয়ে প্রতারণা করেছেন তিনি।

মুগাম্বে উগান্ডার ওই তরুণীকে গৃহস্থালির কাজ করতে বাধ্য করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, সবসময় ওই তরুণীর সাথে ভালো ও ধৈর্যশীল আচরণ করেছেন তিনি। তবে ওই তরুণী আদালতকে জানান, তাকে এক প্রকার বন্দী জীবন দেওয়া হয়। অন্য কোথাও কাজে যাওয়ার সুযোগ খুব একটা ছিল না।

প্রসিকিউটর হাউহে আদালতকে বলেন, ‘ওই তরুণীকে উগান্ডা থেকে যুক্তরাজ্যে আনার পর থেকেই লিডিয়া মুগাম্বের বাসায় বেতন ছাড়া ঘরের কাজ এবং বাচ্চা দেখাশোনার কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। এক প্রকার দাসত্বের জীবন দেওয়া হয় তাকে। নিজের কাজ বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা ও পরিচয়পত্র নিয়ন্ত্রণের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়ে লিডিয়া মুগাম্বের অধীনে থাকতে বাধ্য হন তিনি।’

বিচারকেরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলাটি আমলে নিয়েছেন। লিডিয়া মুগাম্বেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের ষড়যন্ত্র ও জোরপূর্বক কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগসহ কয়েকটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আগামী ২ মে মুগাম্বের সাজা ঘোষণা করা হবে।