Image description

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। বিকেলে এক জরুরি সভায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়াও আগামীকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করবেন তারা।

রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামে সভাপতি অধ্যাপক মো. আব্দুল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, শিক্ষকদের যারা লাঞ্চিত করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সকল প্রকার কার্যক্রম (ক্লাস-পরীক্ষা) নির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। এছাড়াও আগামীকাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করবেন।

এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বা পোষ্য কোটা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখার প্রতিবাদে কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি।

এদিকে কর্মকর্তাদের পর বিএনপিপন্থী শিক্ষকের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণায় শঙ্কায় পড়েছে রাকসু নির্বাচন। যদিও রাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. সেতাউর রহমান বলেছেন, ‘গতকালের ঘটনায় আমাদের নির্বাচনি কোন কার্যক্রম ব্যহত হয়েছে বলে আমরা মনে করছি না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা সকল ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। রাকসু যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের একটা প্রত্যাশা, তাই আমরা সকল পক্ষের সহযোগিতা চাই। উপাচার্য স্যারও আমাদের সকল ধরণের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে নির্দেশনা দিয়েছেন। ২৫ তারিখেই রাকসু নির্বাচন হবে, আমাদের নির্বাচনি সকল কার্যক্রম চলমান।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষক কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন যে গতকালকের ঘটনার ভিত্তিতেই তারা আজকের কর্মসূচি দিয়েছেন এবং সকল জরুরি সেবা তাদের এই আন্দোলনের আওতামুক্ত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ তারিখেই যেহেতু রাকসু নির্বাচন তাই এটি বর্তমানে একটি জরুরি সেবার অবস্থানেই আছে।’

উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আগে থেকেই ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।

সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আবার টানা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।