
জাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটে’র সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম। নির্বাচন বানচালে বিএনপিপন্থী দুই শিক্ষক ইন্ধন দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আজ শুক্রবার বিকালে জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলনে মাজহারুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্যানেলের অন্য প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন বানচালে বিএনপিপন্থী দুই শিক্ষক ইন্ধন দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের ইন্ধন দিচ্ছেন বিএনপিপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম ও অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার (নির্বাচন কমিশনের সদস্য)। অধ্যাপক নজরুল ইসলাম একটি হলের প্রাধ্যক্ষ হয়েও অন্য একটি ছাত্রী হলে ঢুকে মব সৃষ্টি করেন, যার ফলে নির্বাচন কিছুক্ষণ স্থগিত হয়। ছাত্রদলকে ব্যবহার করে তিনি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। হলের বাইরে অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে দেখা গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আজকে সকালে একজন শিক্ষিকা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে এসে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, যিনি গতকাল দায়িত্ব পালন করেননি। কিন্তু নজরুল ইসলামের গ্রুপ সেটাকে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীলতা তৈরি করার চেষ্টা করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল বিকাল পাঁচটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট গ্রহণের এক দিন পার হলেও ভোট গণনা শেষ হয়নি। এক দিন পরও শুধু হল সংসদের ভোট গণনা শেষ হয়েছে। জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা এখনো শুরুই হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এখানে সুস্পষ্টভাবে আমরা ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাচ্ছি। আমরা ভোটের আগের দিন থেকে প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে বলে আসছিলাম যে কোন জায়গাগুলোতে লুপ হোল রয়েছে, কোন জায়গাগুলোতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেন। আমরা একটি ফেয়ার নির্বাচন চাই, শিক্ষার্থীরা যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন, কিন্তু আপনারা ফেয়ার নির্বাচন করেন।’
এই জিএস প্রার্থী বলেন, ‘গতকাল নির্বাচনে নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ছিল। পোলিং এজেন্ট, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার, নির্ধারিত সময়ে ভোট গ্রহণ শুরু না হওয়া—এ সবকিছুতে অব্যবস্থাপনা আমরা দেখেছি। কিন্তু সেগুলো ছাপিয়ে গেছে ছাত্রদলের আগ্রাসী কার্যক্রম; বাগছাসের ক্রমাগত ব্যাশিং ও মিথ্যাচার। গতকাল কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি (সাবেক শিক্ষার্থী) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল থেকে আটক হয়েছিলেন অবৈধভাবে হলে অবস্থান এবং নির্বাচন বানচালের প্রয়াসের জন্য। ছাত্রীদের ১৫ নম্বর হলে সামান্য তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলে মব তৈরি, ফ্রেমিং তৈরি করে শিবিরের ওপর দায় চাপিয়ে দিয়েছে এবং মব তৈরি করে হট্টগোল করেছে, নির্বাচনী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছে। ২১ নম্বর হল ও তাজউদ্দীন আহমদ হলে জোর করে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করেছে।’
জামায়াতপন্থী প্রতিষ্ঠান থেকে ওএমআর নেওয়ার দাবি মিথ্যা উল্লেখ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ওএমআর যে প্রতিষ্ঠান থেকে আনা হয়েছে সেটিকে জামায়াত ট্যাগ দিয়ে বাতিলের চেষ্টা করেছে ছাত্রদল ও বাগছাস। জামায়াতপন্থী যদি কোনো কিছু থাকে, আপনারা দেখতে চাইবেন সে যন্ত্রটি ঠিক আছে কি না; সেটা আপনাদের কনসার্ন থাকা উচিত ছিল, কিন্তু আপনারা কনসার্ন জানিয়েছেন সেটি জামায়াতপন্থী কি না। পরবর্তী সময়ে আমরা দেখতে পেয়েছি, সেটি জামায়াতপন্থী নয় বরং বিএনপিপন্থী ছিলেন।’
ওএমআরে ভোট গণনার সিদ্ধান্ত বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে শিবিরের ওই নেতা বলেন, ‘তার গ্লানি এখনো আমাদের টানতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত যারা ভোট গণনা করছেন তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বাস্তবিকভাবে কোনোভাবেই আজকের মধ্যে ভোট গণনা করা সম্ভব নয়। ওএমআরের মতো ঠুনকো অজুহাতে ছাত্রদল নির্বাচন বানচাল করতে চায়।’