Image description

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ সহযোগী সংগঠনের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন ক্ষোভে ফুঁসছে। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের মতামতকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে ভুল জায়গায় এমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছেন। কেন্দ্র থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে এই কাজী সালাউদ্দিন রাজনৈতিক জীবনে কখনো পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়নি, এমনকি জেল ও খাটেনি। কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া এই কাজী সালাউদ্দিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে তাদের পাশে ছিলেন না। তাছাড়াও এই কাজী সালাউদ্দিন কারাগার গিয়ে কোনো নেতাকর্মীর খোঁজখবর পর্যন্ত নেয়নি।

তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত না নিয়ে এমন একজন নেতাকে হঠাৎ করে মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণায় দলের ভেতরে বিভ্রান্তি, হতাশা ও তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তৃণমূল নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন- কেন্দ্রের এই ভুল সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার না করা হলে বিএনপির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।

শুক্রবার দুপুর থেকেই বাড়বকুণ্ড হাইস্কুল মাঠে ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে এ ক্ষোভের বিস্ফোরক বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসলাম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, যিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, তিনি কখনোই প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি। বরং তৃণমূলের ঐক্যের বাইরে গিয়ে এমন মনোনয়ন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা দলীয় গণতন্ত্রের স্পষ্ট লঙ্ঘন। দলের প্রার্থী নির্ধারণের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামতকে মূল্য না দিলে বিএনপির অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়বে।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক আসলাম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের কথা তুলে ধরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই গণতন্ত্র আজ আবার হুমকির মুখে। ধানের শীষের বিজয়ের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। তৃণমূলের মতামতই বিএনপির প্রাণ। সেই মতামতকে অগ্রাহ্য করা মানে দলের ভিত দুর্বল করা।

সমাবেশে তৃণমূল নেতারা দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে দেওয়া মনোনয়ন অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। অন্যথায় কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া দলের নেতা কর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন কাজী সালাউদ্দিনকে তৃণমূল কোনভাবেই মেনে নেবে না। আমরা অধ্যাপক আসলাম চৌধুরী ব্যতীত কাউকে প্রার্থী হিসেবে মানি না। কেন্দ্রে বসে চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত বিএনপির তৃণমূলকে অপমান করার শামিল।

বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বাড়বকুণ্ড হাই স্কুল মাঠ দুপুর থেকেই আশপাশের এলাকার নেতাকর্মীদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। তাছাড়াও বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। মাঠ ছাড়িয়ে ভবনের ছাদ পর্যন্ত ছিল জনসমুদ্রের ঢল।

সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. কমল কদরের সভাপতিত্বে সমাবেশে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোরসালিন ও উত্তর জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আরঙ্গজেব মোস্তফার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জহুরুল আলম জহুর, জাকির হোসেন, সালেহ আহমেদ সলু, ইউসুফ নিজামী, মুক্তিযোদ্ধা মহরম আলী, এ্যাড. রওশন আরা, নাজমুন নাহার নেলীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।