ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আপনারা বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির ক্ষমতা ও শাসন দেখেছেন, একবার ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় হাতপাখা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়ী করে দেখেন। আমরা ব্যর্থ হলে আর কোনো দিন নির্বাচনে আসব না।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে নরসিংদীর পলাশ উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ফয়জুল করীম বলেন, নির্বাচন-ই মুক্তির পথ নয়। বাংলাদেশে এর আগেও ১২ বার জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জাতি একদল নতুন অপরাধপ্রবণ নেতাকর্মী পেয়েছে। অতীতের নির্বাচনগুলোর মতো মাস্তান-চাঁদাবাজরা ক্ষমতায়িত হলে মুক্তি আসবে না। নীতির পরিবর্তন না করে কেবল নেতার পরিবর্তন করতে নির্বাচন আয়োজন করার জন্য জুলাই অভ্যুত্থান হয়নি। তাই সংস্কার-বিচার ও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে যারা খুন, চাঁদাবাজি, রাহাজানি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেন, তার দায়-দায়িত্ব ভোটারদের নিতে হবে। কারণ আপনারা তাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। সে জন্য একজন মুসলমান হিসেবে ইসলামের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর যারা অমুসলিম, তারাও হাতপাখা মার্কায় ভোট দেবেন— নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও জান-মাল-ইজ্জত রক্ষার্থে। সব ধর্মের মানুষের সমান বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ কে তার কোনো ভেদাভেদ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি বারবার নির্বাচিত হয়ে ১২ বারই ফেল করেছে, বিএনপি পাঁচ বছরের ক্ষমতার মধ্যে দুর্নীতিতে তিনবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত যে ঘটনা ঘটেছে তা সবাই জানে। এখন পলাশে যে ঘটনা ঘটেছে তা পলাশবাসীও জানে। ওরা এখনো ক্ষমতায় যায়নি, তাতেই নিজ দলের নেতা খুনসহ চাঁদাবাজিতে ব্যস্ত রয়েছে। ক্ষমতায় গেলে কি করবে তা আপনারা বুঝতে পারতেছেন।
ফজলুল করীম বলেন, যারা নৌকার নির্বাচন করে, তারা নৌকা চালাতে জানেন না। যারা ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে, তারা ধান কাটতে পারেন না এবং যারা লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করে তারা লাঙ্গল চালাতে জানেন না। কিন্তু হাতপাখা সব শ্রেণি-পেশার মানুষ চালাতে পারেন। এ হাতপাখা প্রার্থী ও ভোটার নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র সবাই চালাতে পারেন। এখানে নৌকা, ধানের শীষ ও লাঙ্গল দরিদ্র মানুষের প্রতীক, কিন্তু এ প্রতীক নিয়ে ধনীরা নির্বাচন করে। অন্যদিকে হাতপাখা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতীক।
নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মহসীন আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- ইসলামী যুব আন্দোলন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) আরিফ বিন মেহের উদ্দিন, জেলা শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শেখ সাদী শাকিল, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সভাপতি ওয়ালি খান, যুব আন্দোলন জেলা শাখার সহসভাপতি মোবারক হোসাইন, পলাশ শাখার সভাপতি মো. সোলায়মান ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক ইকরাম হোসেন প্রমুখ।