
জুলাই আন্দোলনে শহিদদের পরিবারে গতকাল সোমবার ঈদের আনন্দ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। এ সময় জামায়াতের লোকেরা পাকিস্তান যায়নি, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসররাই ভারত চলে গেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরীর উত্তরের সেক্রেটারি বলেন, ‘সবচেয়ে কষ্ট গতকাল আমরা ঈদ উদযাপন করেছি। কিন্তু দেশের অসংখ্য পরিবারে ঈদের আনন্দ ছিল না। বিশেষ করে যারা এ বিপ্লবে শহীদ হয়েছেন। ওই মায়েদের, ওই পরিবারে কিন্তু ঈদের আনন্দ নেই।’
ঈদের নামাজের পর শহিদ কাউসার হোসেন বিজয়ের বাড়িতে ছুটে গেছেন জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন,‘তার বাবাকে বললাম কি অবস্থা, কেমন আছেন? বলল যে, সারারাত তারা কান্নাকাটি করেছে।এভাবে অসংখ্য পরিবারের ঈদ আনন্দকে ফ্যাসিস্ট সরকার কেড়ে নিয়েছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘যে যুবকরা গুলিবিদ্ধ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, তাদের ঈদের আনন্দ ছিল না। তাদের পরিবারে ঈদের আনন্দ নেই। শহিদদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে একটি ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ আমরা করবই।’
আগের আচার আচরণ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন পরিবর্তন হয়ে গেছে। পুরনো কায়দায় চাঁদাবাজি-লুণ্ঠন বন্ধ করুন। মানুষের ওপর নির্যাতনের পরিকল্পনা এখন আর জনগণ মানবে না।যারা মানুষের ওপর নির্যাতন করবে, সেই স্টিমরোলার চালাবে, জনগণের শক্তি কিভাবে তা উপড়ে ফেলবে ৫ আগস্ট সেই ফ্যাসিস্টরা হচ্ছে তার বড় প্রমাণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কিছু কিছু এলাকা গত ১৫ বছর ফিলিস্তিনি-গাজার মতোই ছিল।কোনো কোনো ভুখণ্ডকে আওয়ামী লীগ সেরকমই বানিয়েছিল।শাপলা চত্বরে যখন আমাদের আলেম ওলামাদের রক্তে লাল করা হয়েছিল, তখন ফিলিস্তিনির মতোই পরিণত হয়েছে। সাতক্ষীরা ও ঝিনাইদহসহ অসংখ্য এলাকাকে ফিলিস্তিনির বুলডোজার দিয়ে জমিনের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে।’
রেজাউল করিম বলেন, ‘যারা মিশিয়ে দিয়েছে, তারা কিন্তু এ জমিতে থাকতে পারে নাই। তারা কিন্তু পালিয়ে গেছে। তারা আমাদেরকে পাকিস্তানি লোক বলতো। বিরোধী দলকে বলত পাকিস্তান চলে যান। আমরা কিন্তু পাকিস্তান যাইনি, আওয়ামী লীগের সব লোকেরাই কিন্তু ভারত চলে গেছে।’
ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুর রবের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বাড্ডা থানার আমির মাওলানা কুতুব উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী হারুনুর রশিদ, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবু সালেহ ইব্রাহীম, সেক্রেটারী হাফেজ আবদুল হক ও জামায়াত নেতা তায়েফ হোসেন প্রমুখ।