মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার তালুককান্দি শামসুল উলুম মাদরাসার শিক্ষার্থী। ১০ বছর বয়সী এ শিশু মাত্র ৯ মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়েছেন। তার এমন অবিশ্বাস্য অর্জনে উচ্ছ্বসিত পরিবার ও প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও তার সহপাঠীরা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে মাদরাসা মিলনায়তনে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আব্দুল্লাহসহ পাঁচ কোরআনে হাফেজকে পাগড়ি পরিয়ে সম্মাননা জানান প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল মাওলানা তাজুল ইসলামসহ আগত অতিথিরা।
আব্দুল্লাহ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের তুলাতুলী এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. আলী হোসেনের ছেলে। চার ভাই বোনের মধ্যে দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ।
সহকারী শিক্ষক হাফেজ ক্বারী হাবিবুর রহমান জানান, এক বছর আগে তালুককান্দি শামসুল উলুম মাদরাসায় ভর্তি হন আব্দুল্লাহ। শুরুতে সে পড়ায় বেশ মনোযোগী ছিল।
শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে কঠোর অধ্যবসায় মাত্র ৯ মাসে কোরআনে হিফজ শেষ করেছে। এটি সত্যিই এক বিরল অর্জন। এর আগেও আমাদের এক শিক্ষার্থী সাড়ে সাত মাসে কোরআনে হাফেজ হন।
কোরআনে হাফেজ হওয়ার মাত্র দুই দিন আগে মৃত্যুবরণ করেন আব্দুল্লাহর দাদা হাজী আব্দুল জব্বার।
মূলত তার প্রবল ইচ্ছে ও উৎসাহের কারণে দ্রুত কোরআন মুখস্ত করতে শুরু করেন আব্দুল্লাহ। তবে শেষ পর্যন্ত নাতির কোরআনে হাফেজ হওয়া দেখে যেতে পারেননি তিনি।
হাফেজ আব্দুল্লাহ বলেন, দাদার প্রবল ইচ্ছে, পরিবার ও শিক্ষকদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মাত্র ৯ মাসেই পুরো কোরআন মুখস্থ করার সম্ভব হয়েছে। আজ এই দিনে আমার দাদাকে বেশ মনে পরছে। উনার ইচ্ছে ও উৎসাহ প্রদানের কারণে আজ আমি কোরআনে হাফেজ।
আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করি। সবাই আমার দাদার জন্য দোয়া করবেন।
সন্তানের এমন সাফল্যে আনন্দিত আব্দুল্লাহর বাবা মালয়েশিয়া প্রবাসী আলী হোসেন জানান, দুই মেয়ে ও দুই ছেলে মধ্যে দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। ছেলে কোরআনে হাফেজ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের আন্তরিকতা প্রশংসা করেন এবং কৃতজ্ঞতা জানান।
তালুককান্দি শামসুল উলুম মাদরাসায় প্রিন্সিপাল মাওলানা তাজুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ মাত্র ৯ মাসে কোরআনে হাফেজ হয়েছেন। এর আগেও আরেক শিক্ষার্থী মাত্র সাড়ে সাত মাসে কোরআনে হাফেজ হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের এমন সাফল্যে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসাবে আমি আনন্দিত ও গর্বিত।