Image description
ঝুঁকিতে জীবন, নীতির লঙ্ঘন আইকাওয়ের । ১৯ বছর ধরে লাইসেন্স নেই এক ইন্সপেক্টরের । অনিয়মের অভিযোগ বেবিচকের ফ্লাইট সেফটির শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

দেশের পাইলটদের লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়নের দায়িত্ব পালন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ফ্লাইট অপারেশনস ইন্সপেক্টররা (এফওআই)। তাঁরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সব ধরনের যোগ্যতা যাচাই করে একজন পাইলটের লাইসেন্সের সুপারিশ করে থাকেন। তবে যাঁরা এই লাইসেন্সিংয়ের কাজ করছেন, বেবিচকের সেসব কর্মকর্তারই দীর্ঘদিন ধরে এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্স (এটিপিএল) নেই।

তাঁদের মধ্যে একজন কর্মকর্তার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৯ বছর আগে।

আবার ফ্লাইং কারেন্সি হারিয়েছেন অনেকে। লাইসেন্সবিহীন ও নন-কারেন্ট (নিয়মিত উড্ডয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন) এসব ইন্সপেক্টরের মাধ্যমে পাইলটদের লাইসেন্স নবায়ন, চেক রাইড ও সার্টিফিকেশন সম্পন্ন হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইকাও) নির্দেশনায় এফওআই কর্মকর্তাদের লাইসেন্স থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তার তোয়াক্কা করছে না বেবিচক। অযোগ্য কর্মকর্তাদের দিয়ে পাইলটদের লাইসেন্স ইস্যু করে দেশের বিমান নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে সংস্থাটি।

এই পরিস্থিতিকে গুরুতর অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত করছেন দেশের বিমান চলাচল খাতের বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, যে কর্মকর্তারা নিজেদের ফ্লাইট কারেন্সি শেষ হওয়া বা মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় লাইসেন্স হালনাগাদ রাখতে পারেননি বা দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্সবিহীন অবস্থায় আছেন, তাঁরা কিভাবে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী একজন পেশাদার পাইলটের দক্ষতা ও যোগ্যতা বিচার করে লাইসেন্স ইস্যু করেন?

আইকাওয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে লাইসেন্সবিহীন কর্মকর্তাদের এই দায়িত্বে রাখা সরাসরি বিমান নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করার শামিল, যা কেবল পাইলটদের মান নিয়েই নয়, দেশের পুরো আকাশপথের নিরাপত্তাকাঠামো নিয়েও উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।

জানা গেছে, আইকাওয়ের ডক ৮৩৩৫-এর ৬.২.১.১ প্যারা অনুযায়ী, লাইসেন্স সম্পর্কিত দায়িত্ব পালনকারী যেকোনো ইন্সপেক্টরের বৈধ পাইলট লাইসেন্স ও বর্তমান টাইপ রেটিংসহ পূর্ণ অপারেশনাল যোগ্যতা থাকতে হবে। বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন প্রসিডিউরেও একই শর্ত রয়েছে।

তাদের নির্দেশনা অনুয়ায়ী, একজন এফওআই পাইলটের শিক্ষাগত যোগ্যতা, ফ্লাইট ঘণ্টা, টাইপ রেটিং, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট, লিখিত পরীক্ষা, সিমুলেটর পরীক্ষা বা লাইভ ফ্লাইট পরীক্ষা তদারকি করেন। তাঁরা নিশ্চিত করেন পাইলট নিরাপদে ফ্লাইট পরিচালনা করতে সক্ষম কি না; পাইলটের প্রশিক্ষণ, মেডিক্যাল সার্টিফিকেট, আগের লাইসেন্স রেকর্ডে কোনো অনিয়ম বা তথ্যের ঘাটতি আছে কি না। তবে যেসব কর্মকর্তা এই পদে দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের নিজেদের কারো লাইসেন্স নেই। সে ক্ষেত্রে যোগ্যতা ছাড়াই তাঁরা লাইসেন্স প্রদানের কাজ করছেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে এফওআইয়ের দায়িত্ব পালন করা ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনেরই লাইসেন্সের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হয়েছে।

তাঁরা হলেনক্যাপ্টেন রাফি উল হক, ক্যাপ্টেন ফরিদ উজ জামান, ক্যাপ্টেন আশরাফুল আজহার, ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ মিয়া ও ক্যাপ্টেন মনিরুল হক জোয়ারদার। অন্যজন ক্যাপ্টেন ফেরদৌস হোসেনের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে ৬৮ বছর বয়সে। তাঁর এয়ার ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্স (এটিপিএল) নম্বর ৪১২। আইকাওয়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তাঁর মেডিক্যাল-সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট চায়নি বেবিচক।

 

বেবিচক সূত্র জানায়, ক্যাপ্টেন রাফি উল হকের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০০৬ সালে (এটিপিএল নম্বর ২৬), ক্যাপ্টেন ফরিদ উজ জামানের ২০১৫ সালে (এটিপিএল নম্বর ৬৫), ক্যাপ্টেন আশরাফুল আজহারের ২০১৬ সালে (এটিপিএল নম্বর ১৫২), ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ মিয়ার ২০১৫ সালে (এটিপিএল নম্বর ৮০) এবং ক্যাপ্টেন মনিরুল হক জোয়ারদারের ২০২৫ সালের জুলাই মাসে (এটিপিএল নম্বর ১৪৩)।

প্রশ্নবিদ্ধ এফওআইয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম ক্যাপ্টেন ফরিদ উজ জামান। তিনি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজে চাকরি করেছেন। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি। এই পাইলটের এর আগে কোনো এয়ারলাইনসেই প্রশিক্ষক হওয়ার অভিজ্ঞতা ছিল না। তিনি ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইনস্ট্রাক্টর রেটিংয়ের নানা বিধি লঙ্ঘন করেছেন। মেডিক্যাল-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস থেকে চাকরিচ্যুত হন তিনি।

ক্যাপ্টেন আশরাফুল আজহারের কমার্শিয়াল ফ্লাইট পরিচালনার অভিজ্ঞতা নেই। এ ছাড়া এফওআই হওয়ার জন্য একজন ক্যাপ্টেনের পাঁচ হাজার ঘণ্টা ফ্লাইং আওয়ারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে বেবিচকের। কিন্তু ক্যাপ্টেন আশরাফুলের ক্যাপ্টেন হিসেবে পাঁচ হাজার ঘণ্টা হয়নি। তাঁর অত্যাধুনিক এয়ারক্রাফট চালানোর অভিজ্ঞতাও নেই।

ক্যাপ্টেন ফেরদৌস হোসেন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের পাইলট ছিলেন। তাঁর কমার্শিয়াল ফ্লাইট পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

ক্যাপ্টেন মনিরুল হক জোয়ারদার এয়ার পারাবতের চিফ ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আরো কয়েকটি প্রাইভেট এয়ারলাইনসে ম্যানেজমেন্ট পদে এবং টার্বোপ্রপ বিমানের ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেছেন। দায়িত্বরত অবস্থায় পাঁচটি পৃথক দুর্ঘটনা ঘটে এবং ছয়জন পাইলট প্রাণ হারান।

আরো আছেন ৭৪ বছর বয়সী গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) আশরাফুল আজহার এবং ৭৬ বছর বয়সী ক্যাপ্টেন আব্দুল মাজেদ, যাঁদের কারো বৈধ লাইসেন্স বা মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নেই। তবু তাঁরা বিভিন্ন তদন্ত কমিটি, সার্টিফিকেশন এবং নীতিবহির্ভূতভাবে বৈধ লাইসেন্স ছাড়া এ-৩৩০ টাইপ রেটিং করেছেন, যে কারণে বাংলাদেশ এসএসসির মতো শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে।

বেবিচকের এফওআইদের লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার মতো গুরুতর অনিয়মগুলো আইকাওয়ের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। ফলে আগামী আইকাও কো-অর্ডিনেটেড ভেলিডেশন মিশন অডিটে বাংলাদেশ সিগনিফিক্যান্ট সেফটি কনসার্নের (এসএসসি) মুখোমুখি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফল হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসসহ দেশের বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর প্লেন কেনা, ভাড়া, কোড-শেয়ার এবং রুট সম্প্রসারণের পরিকল্পনায় বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান প্রশাসন (এফএএ), ইউরোপীয় বিমান নিরাপত্তা সংস্থা (ইয়াসা) এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিমান সংস্থার (আয়াটা) নিরাপত্তা মূল্যায়ন ও তদারকিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমেও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

বেবিচকের একজন কর্মকর্তা জানান, লাইসেন্সবিহীন এই ইন্সপেক্টররা বেবিচকের সিকিউরিটি পাসের সুবিধার জন্য এই বিভাগে থাকতে চান। এই বিভাগে থাকলে জেনারেল ডিক্লারেশন (জিডি) পাস দিয়ে ভিসা ও টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করতে পারেন। বিভিন্ন সময়ে তাঁরা এই জিডি পাস ব্যবহার করে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে দেশের বাইরে যান এবং সরকারি আদেশ বা জিও না নিয়েই বিদেশে গিয়ে অডিট করেন। এই অবৈধ সুবিধাধারীদের মধ্যে রয়েছেন বিমানের অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন ফরিদ উজ জামান, ক্যাপ্টেন মাজেদ ও মোতাহার।

বেবিচকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, তাঁরা নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট না হলে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিকেও বেবিচক থেকে সরিয়ে দিতে দ্বিধা বোধ করেন না। কাজের বাইরে রাজনৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। সম্প্রতি দুজন এফওআইয়ের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের চুক্তি নবায়ন করেনি বেবিচক। ওই দুজনের বৈধ লাইসেন্স এবং ক্লাস-১ মেডিক্যাল ছিল। চুক্তি নবায়ন না করা দুজন হচ্ছেনসাবেক এফওআই আজিজ আব্বাসি রফিক এবং এফওআই কাজী কবির উদ্দিন আহমেদ।

ক্যাপ্টেন আজিজ আব্বাসী রফিকের (জ্যেষ্ঠ এফওআই) বৈধ লাইসেন্স থাকলেও গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাঁর ফ্লাইং কারেন্সি শেষ হয়ে যায়। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ছিল তাঁর কারেন্সি হালনাগাদ রাখার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু ঊর্ধ্বতনরা এ বিষয়ে তাঁকে সিমুলেটর রি-কারেন্ট ট্রেনিংয়েও পাঠাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে ক্যাপ্টেন রাফিউল হকের (জ্যেষ্ঠ এফওআই) বয়স ৮০ বছরের বেশি। তার সার্টিফিকেট বহু আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে।

এদিকে নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আইকাওয়ের নির্দেশনার পাত্তা দেয়নি বেবিচক। অনিয়মের অভিযোগের মধ্যেই ৮ নভেম্বর এফওআই নেওয়ার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বেবিচক। তাদের এই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারীর যোগ্যতার জন্য আইকাও মানদণ্ড মানা হয়নি।

আইকাওয়ের ডক ৮৩৩৫-এর ৬.২.২.১ প্যারা অনুযায়ী, লাইসেন্স সম্পর্কিত দায়িত্ব পালনকারী যেকোনো ইন্সপেক্টরের বৈধ পাইলট লাইসেন্স ও বর্তমান টাইপ রেটিংসহ পূর্ণ অপারেশনাল যোগ্যতা থাকার কথা থাকলেও বেবিচকের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তিতে বৈধ লাইসেন্স, বর্তমান টাইপ রেটিং কিংবা বয়সসীমাকোনোটিই বাধ্যতামূলক রাখা হয়নি। অথচ পূর্ববর্তী নিয়োগে এসব শর্ত স্পষ্টভাবে ছিল। এফওআই পদে আবেদনের জন্য বৈধ লাইসেন্স ও টাইপ রেটিংয়ের বাধ্যতামূলক শর্ত বাদ দেওয়া হয়েছে।

নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, লাইসেন্স ও টাইপ রেটিংয়ের শর্ত নেই। ফলে এই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টররা আইকাওয়ের চোখে অযোগ্য হয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের তদারকি ও অডিট কার্যক্রমও অকার্যকর বিবেচিত হতে পারে, যা পুরো লাইসেন্সিং ও নিরাপত্তা তদারকি ব্যবস্থাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।

এদিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কনসালট্যান্ট পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা আগে হালনাগাদ এটিপিএল ছিল। বর্তমানে শিক্ষাগত যোগ্যতা কমিয়ে এইচএসসি করা হয়েছে, যা পাবলিক প্রোকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮-এর লঙ্ঘন।

চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে যোগ্যতা না থাকায় চার কনসালট্যান্টের চুক্তি নবায়ন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পরে ৭ অক্টোবরের আরেক চিঠিতে বলা হয়, শুধু যোগ্য ব্যক্তিদের চুক্তি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। কিন্তু বেবিচকের যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ৪৬ জনের চুক্তি নবায়ন করেছে।

এসব অযোগ্য এফওআইকে দিয়ে অডিট, সার্টিফিকেশন ও প্রশিক্ষণ তদারকি আইকাও মানদণ্ডকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে বলে মনে করেন এভিয়েশন খাতের বিশ্লেষকরা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও এভিয়েশন বিশ্লেষক কাজী ওয়াহিদুল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, যাঁদের নিজেদের লাইসেন্স নেই, তাঁরা অন্যের লাইসেন্সের সুপারিশ কিভাবে করেন? আগে নিজেকে ভ্যালিডেট রাখতে হবে, এরপর অন্যের ভ্যালিডেট করাতে পারব। আইনত এটা গুরুতর অনিয়ম। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আগে থেকেই বেবিচককে সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। কেন হয়নি, তা বেবিচক বলতে পারবে। অনেক দিন ধরে আইকাও অডিটের কথা শুনছি, কিন্তু হচ্ছে না। এসব অনিয়ম আইকাও রীতিনীতিরও পরিপন্থী।

অ্যাক্টিভ পাইলট হওয়ার বাধ্যবাধকতা সবার জন্য নয় : বেবিচক

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বেবিচকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, আইকাও ডকুমেন্ট অনুযায়ী ফ্লাইট অপারেশনস ইন্সপেক্টররা (এফওআই) দুই ধরনের কাজ করে থাকেন। এর মধ্যে কিছু কর্মকর্তা লাইসেন্স-সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করেন এবং অন্যরা লাইসেন্স ছাড়া কাজ করেন। অ্যাক্টিভ পাইলট হতে হবেএমন কোনো বাধ্যবাধকতা তাঁদের জন্য নেই। তবে যাঁরা লাইসেন্স নিয়ে কাজ করেন, আইকাও নীতিমালা অনুযায়ী তাঁদের অ্যাক্টিভ পাইলট হতে হয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে লাইসেন্সিং টেস্টের বেশির ভাগই সিমুলেটরে হয়ে থাকে এবং লাইসেন্সের শেষ ধাপে টাইপ রেটিং হয়। আমাদের চুক্তিবদ্ধ ডিএফওয়াইরা (ডেজিগনেটেড ফ্লাইট ইন্সপেক্টর) এ কাজ করে থাকেন। অর্থাৎ বিমানের বোয়িং ৭৩৭-এর একজন পাইলটকে আমরা বিমান ছাড়া অন্য এয়ারলাইনসের লাইসেন্স-সংক্রান্ত কাজে ব্যবহার করি।

লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার প্রসঙ্গে কাউছার মাহমুদ বলেন, আমাদের বর্তমান লাইসেন্সধারী পাইলটরা যদি ফ্লাইট কারেন্সি রাখেন, তবে লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় না। কিন্তু অনেকের বয়স ৬৫ বছর ছাড়িয়ে গেছে, যার কারণে তাঁরা লাইসেন্সের প্রিভিলেজ (সুবিধা) এক্সারসাইজ (ব্যবহার) করতে পারেন না। আমরা এ জন্য নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। আমাদের পাঁচজন ইন্সপেক্টরের সবার বয়স ৬৫ বছরের বেশি। নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।