রাজধানীর কড়াইল বস্তির আগুনে পুড়ে গেল স্বল্প আয়ের মানুষের ছোট ছোট স্বপ্নগুলো। কড়াইল বস্তিতে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৬টি ইউনিট। পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে কড়াইল বস্তির অনেক ঘর। স্বল্প আয়ের মানুষদের ঘর পুড়ে যাওয়ার কারণে তারা কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। তাদের দৈনন্দিন আয়ের টাকা দিয়ে মাসে মাসে পরিশোধ করতে হয় কিস্তির টাকা, তাও ছাই হলো সর্বনাশা আগুনে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। সরেজমিনে দেখা যায়, বাসিন্দাদের বস্তির ভেতরে যেতে দিচ্ছে না ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বস্তির আমেনা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা মাসে মাসে কিস্তির টাকা পরিশোধ করি। অনেক কষ্টে দিন কাটাই। আমাগো সব টাকা আগুনে ছাই হয়ে গেলো। এখন কিভাবে চলবো। কি করবো, কোথায় যাব,।
আগুনে ঘর পুড়েছে বস্তির আরেক বাসিন্দা কুলসুম বেগমের। তিনিও কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার সব আগুনে পুড়ে শেষ। সাত বছর ধরে এই বস্তিতে আছি। অনেক কষ্টে তিল তিল করে জিনিসপত্র কিনেছিলাম। ঘরে টিভি, ফ্রিজসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র কিনেছিলাম। মাসে মাসে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হয়। এ আগুনে আমার সব শেষ হয়ে গেল।
বস্তির বাসিন্দা রোজি আক্তার পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তিনি বলেন, শুনেছি আমার ঘর পুড়ে গেছে। সব জিনিস নাকি পুড়ে গেছে। এখন আমি কীভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না।
একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুলসুম ও লা্ইলির মতো অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাস করে এই বস্তিতে। আজকের এই ভয়াবহ আগুনে তাদের অনেককে পথে বসতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কড়াইল বস্তিতে লাগা আগুন বেশ বড় আকারে রূপ নিয়েছে। ক্রমশ চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে এটি। পানির অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। আগুন নেভাতে মোট ১৬টি ইউনিট কাজ করছে।
শীর্ষনিউজ