Image description

সংস্কারের বিরুদ্ধে গিয়ে অনেকে মুজিববাদী রাজনীতিকে প্রাসঙ্গিক করে তুলছে বলে মনে করেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত খুবই জনপ্রিয় শব্দ। কিন্তু কয়েকটা পপুলিস্ট কাজ করলেই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত আসবে না। কেউ সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দেয়নি এই নতুন বন্দোবস্তের।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত "নভেম্বর থেকে জুলাই, বিপ্লব থেকে বিপ্লবে " শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমরা এখন দেখছি ছাত্র সংসদ বা রাজনীতির মধ্যে ওয়েলফেয়ার পলিটিক্স জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক দলের নেতারা এস্টাবলিশমেন্টকে ক্ষমতা দিয়ে আসে সরকার গঠন করার। তখন আমাদের আসলে বেশি কিছু করার থাকে না।

আসিফ মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার পর একটা আদর্শ রাষ্ট্র গঠনে ব্যর্থ হয়েছি। কারণ যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয় তারা লুটপাটে ব্যস্ত ছিল। যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭৫ সাল আসে। একই ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালে। রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে দাবি করার সক্ষমতা তৈরি হয়েছিল ৭৫ এর পর। প্রধান উপদেষ্টা যেখানেই যান সার্কের কথা বলেন। সেই সার্ককে কাজে লাগাতে হবে।

বিএনপি, আওয়ামী লীগ এরপর ক্ষমতায় এলেও সন্তোষজনক পররাষ্ট্র নীতি প্রণয়ন করতে পারেনি। পররাষ্ট্র নীতি- সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। অথচ দেখা যাচ্ছে আমাদের কোনো বন্ধুই নেই। গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক নেতারা এস্টাবলিশমেন্টের কোলে বসে গেছে। তখন সরকারের আসলে খুব বেশি কিছু করার থাকে না।

ফরহাদ মজহার বলেন, সময় খুব কম। ৫ তারিখের পর শহীদ মিনারে শপথ নিয়ে সংবিধান বাতিল ঘোষণা করা। পরবর্তীতে গঠনতন্ত্র বা গণপরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক ও আন্তর্জাতিক আইন বলবত থাকবে। কিন্তু এটা না হওয়ার জন্য তরুণরা দায়ী। তরুণরা এখনও পর্যন্ত একটা পত্রিকা বের করতে পারে নাই। ইন্ডিয়া বসে আছে কিছু একটা ঘটিয়ে হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে। এই সরকার অবৈধ। এই সরকারের কোনো এখতিয়ার নেই ঐকমত্য কমিশন গঠন করে আলোচনা করার।

এই সংবিধান বাতিল না কলে সরকার অবৈধ। এই সংবিধানের অধীনে শপথ নিলে সংবিধান রক্ষা করতে হবে। অথবা এই সংবিধান বাতিল করতে হবে। অথচ এখন পর্যন্ত এই সংবিধান বাতিল ঘোষণা করা হয় নাই। যখনি কোনো গণঅভ্যুত্থান হয়, তখনি গণসার্বভৌমত্ব করতে হবে। দেশের সব নীতি ঠিক করবে জনগণ। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। যেন জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, ৭৫ এর ঘটনায় সবাই যেখানে আফসোস করার কথা, সেখানে সবাই আনন্দ করেছিল । সকাল ১১ টায় সূর্য সেন হলের সামনে ট্যাংক আসলে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছিল। ৭ ই নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতির দিনে সাধারণ সৈনিকরা নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়েছিল। আমরা তো আমাদের ভাষা, খাদ্য অভ্যাস বা চেহারা পরিবর্তন করতে পারব না। ৭১ এর পর বুদ্ধিজীবীদের উচিত ছিল জাতি বিনির্মাণ করা ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু, কর্নেল হাসিনুর রহমান, বীরপ্রতীক, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট মুহাম্মাদ সজল, জুলাই রেভলিউশনারি অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র ফানতাসির মাহমুদ প্রমুখ।