 
              রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভিন্নতার কারণে বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এক গভীর অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি এবং গণভোটের সময়সূচি নিয়ে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক পক্ষ—বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি বলছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠান অপ্রয়োজনীয় ও অযৌক্তিক বলেও মত দলটির। অন্যদিকে, নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ পাঁচ দাবিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হয়েছে জামায়াতসহ আট দল। এমনকি আজ শুক্রবারের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে এনসিপি বলেছে, বিএনপি অনলাইনে ‘না’ শব্দ জারি করেছে। বিএনপির ‘না’ বলার কোনো ওয়ে নেই। তারা অলরেডি ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছেন। তারা কাবিননামায় সইও করেছেন। এখন তাদের ‘না’ বলার কোনো অপশন নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিভিন্ন দলের পরস্পরবিরোধী এই অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলগুলোর মতভিন্নতা ও মেরূকরণ স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়—এই সংকট থেকে উত্তরণের কোনো সহজ বা বিকল্প পথ খোলা নেই। দলগুলোর মধ্যে কার্যকর ঐক্য ও ছাড় দেওয়ার মানসিকতা ছাড়া এই অচলাবস্থা নিরসন অসম্ভব। গণভোটের চেয়ে বেশি জরুরি সর্বসম্মত বাস্তবায়নের রোডম্যাপ।
৩৩টি দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে সংবিধানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কারের সুপারিশসহ ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি করা হয়। গত ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবন চত্বরে জুলাই সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হয়। এরই মধ্যে ২৫টি দল ও জোট জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু সমস্যা বেঁধেছে সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জমা দেওয়া ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা। এতে বলা হয়েছে, ৪৮টি প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে। আর গণভোট হবে একটি প্রশ্নে। সমস্যা তৈরি হয়েছে, দলগুলোর দেওয়া ‘নোট অব ডিসেন্ট’ গণভোটে না রাখার সুপারিশ নিয়ে। বিএনপি বিষয়টিকে রাজনৈতিক দল ও জাতির সঙ্গে প্রতারণা হিসেবে দেখছে।
‘মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব অকল্যাণ ডেকে আনবে’: সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে যে সুপারিশ দিয়েছে, তা ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলেছে বিএনপি। গতকাল দুপুরে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যেসব বিষয়ে ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্টসহ ঐকমত্য হয়েছে, তার উল্লেখ না রেখে দীর্ঘ আলোচনায় যেসব প্রসঙ্গ আসেনি, তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অন্য সব সুপারিশ অগ্রহণযোগ্য বিধায় আমরা একমত হতে পারছি না। এসব সুপারিশ শুধু জাতিকে বিভক্ত করবে, ঐক্যের বদলে অনৈক্য সৃষ্টি করবে। মনগড়া যে কোনো সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করলে জাতীয় জীবনে দীর্ঘমেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা শুধু আলোচনার মাধ্যমে প্রণীত জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু সেদিন সনদের চূড়ান্ত কপি আমাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। পরে প্রিন্টেড পুস্তক হিসেবে সনদের কপি আমরা হাতে পাওয়ার পরে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে সম্মত কয়েকটি দফা আমাদের অগোচরে পুনরায় সংশোধন করা হয়েছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘আদেশ জারি’র এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের আদেশ জারির কোনো ক্ষমতা নেই। সংবিধান পরিবর্তনের এখতিয়ার শুধু নির্বাচিত সংসদের।
আজকের মধ্যেই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ চায় জামায়াত: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ আজকের মধ্যেই জারির দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জামায়াত রাষ্ট্র সংস্কারে দেওয়া ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন চায়। সে জন্য আগামীকালের (আজ শুক্রবার) মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে হবে। সরকার চাইলে আজ (গতকাল) রাতের মধ্যেও সেটি করতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সময়ক্ষেপণ না করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেরি হলে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) জনগণের আস্থা হারাবে।
গণভোটের পরে ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, এমন কোনো বিষয় যাতে সামনে আনা না হয়, যে কারণে নির্বাচন সংশয় বা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। জাতীয় নির্বাচনের জন্য ফেব্রুয়ারিই উপযুক্ত সময়।
আট দলের দাবি—নভেম্বরে গণভোট: জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোট করাসহ পাঁচ দাবিতে গতকাল ইসির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আটটি দল। অন্য দলগুলো হচ্ছে খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), নেজামে ইসলাম পার্টি, ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। তারা দ্রুত সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে।
ইসি কার্যালয় থেকে বের হয়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান সময়ের আলোচিত বিষয় হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি। আমরা দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়েছি।
এনসিপির কড়া বার্তা: জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির বর্তমান অবস্থানকে তীব্র সমালোচনা করেছে এনসিপি। দলটি মনে করে, সনদের আইনি ভিত্তি স্পষ্ট না করে স্বাক্ষর করা বিএনপির ঠিক হয়নি। গতকাল এক অনুষ্ঠানে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, “বিএনপি অনলাইনে ‘না’ শব্দ জারি করলেও তাদের ‘না’ বলার কোনো ওয়ে নেই। কারণ তারা অলরেডি ‘হ্যাঁ’ বলে দিয়েছে। তারা বিবাহে রাজিও হয়েছে, কাবিননামায় সইও করেছে। এখন তাদের না বলার কোনো অপশন নেই।” বিএনপির ভেবেচিন্তে জুলাই সনদে সই করা উচিত ছিল মন্তব্য করে পাটওয়ারী বলেন, “জুলাই সনদে সই করে বিএনপি ভুল করেছে এবং এখন তাদের ‘কাফফারা’ দেওয়া উচিত।”
অন্যান্য দলের অবস্থান: জুলাই সনদের সুপারিশ জমা দেওয়ার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দল। গণসংহতি আন্দোলন বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ সনদের বাস্তবায়নকেই অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে। দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ঐকমত্য কমিশনের কিছু সুপারিশ কমিশনের বৈঠকের আলোচনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং কিছু সুপারিশ গণতান্ত্রিক রীতিপদ্ধতির অনুসরণ করে না। এই সুপারিশমালা বিভ্রান্তি তৈরি করছে, যেটা জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সম্ভাবনাকে আশঙ্কার মুখে ফেলছে। শুধু গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন কিংবা ভিন্নমতের মীমাংসার বিষয়ে কোনো ঐকমত্য তৈরি হয়নি। ফলে এ ধরনের কোনো প্রক্রিয়া অনৈক্য ও বিভেদের সৃষ্টি করবে এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করবে। ভিন্নমত চাপিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া মোটেই গণতান্ত্রিক নয়।
তারা বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতির ওপর আস্থা রাখা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন তাতে আস্থা রাখতে পারছে না। কোনো বিশেষ পক্ষকে খুশি করতে জাতীয় ঐকমত্যকে হুমকির মুখে ফেলছে বলেও জনগণের ভেতরে ধারণা তৈরি হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান করুন।
বিবাদমান পক্ষগুলোকে অহমিকা এবং তর্ক-বিতর্ক পরিহার করে ‘জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ’ কার্যকরে একমত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে নির্বাচন অনিশ্চিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। গতকাল রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা মনে করি গণভোটে ‘হ্যাঁ’ সূচক ভোটদানের মাধ্যমে এদেশের নাগরিকরা জুলাই জাতীয় সনদের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের অভিপ্রায়েরই বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে। সে ক্ষেত্রে নোট অব ডিসেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বিলুপ্ত হওয়া উচিত। আশা করব, যেসব রাজনৈতিক দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, গণভোটের আগেই জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে তারা সেগুলোকে কাটছাঁট করে হলেও সমঝোতার মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেবেন। তিনি আরও বলেন, ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে নির্বাচন আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে এবং ড. ইউনূসকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হতে পারে। তখন পরিস্থিতি ভয়ানক জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেন তিনি।
দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে: রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে এই ভিন্নমতগুলো রাজনৈতিক বিভাজনকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। গণভোটের সময়, বাস্তবায়নের আইনি পদ্ধতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা নিয়ে এই মতানৈক্য জুলাই সনদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ঐকমত্য কমিশন কীভাবে সব দলের জন্য গ্রহণযোগ্য সমাধান আনবে, সেদিকে সবার নজর রয়েছে।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সাহাবুল হক কালবেলাকে বলেন, ‘বহুল প্রত্যাশিত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে যে গভীর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক ঐকমত্যের আভাস পাওয়া গিয়েছিল; কিন্তু এখন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া, বিশেষত অন্তর্বর্তী সরকারের এখতিয়ার ও গণভোটের সময়সূচি নিয়ে প্রধান দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভিন্নতা পরিস্থিতিকে এক নয়া সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে। দলগুলোর মধ্যে কার্যকর ঐক্য ও ছাড় দেওয়ার মানসিকতা ছাড়া এই অচলাবস্থা নিরসন অসম্ভব।
ড. সাহাবুল হক বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে একটি গভীর অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে আয়োজন করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন জাগছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে, নির্বাচন কেন্দ্র করে এই অস্পষ্টতা দূর করা অত্যাবশ্যক।
তিনি আরও বলেন, যেখানে জুলাই সনদের মতো একটি বিষয়ে সই করার পরও দলগুলো বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে এতটা দ্বিধাবিভক্ত, সেখানে গণভোটের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা এবং এর ফল সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। ঐকমত্য ও আস্থার অভাবে গণভোটও নতুন বিতর্ক এবং সাংবিধানিক জটিলতার জন্ম দিতে পারে। এই মুহূর্তে গণভোটের চেয়ে বেশি জরুরি হলো দলগুলোর আলোচনার টেবিলে বসে একটি সর্বসম্মত বাস্তবায়ন রোডম্যাপ তৈরি করা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রচর্চা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন, এরপর সরকার এবং তারপর আরও ২৭০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে সনদ বাস্তবায়নের জন্য। এত দীর্ঘসময়ের ফলে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী জুলাই সনদ নিয়ে জনগণের মধ্যে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, তাতে গুড়েবালি হতে পারে। আর জাতীয় নির্বাচনের পর সনদ নিয়ে আবার বিতর্ক শুরু হলে তার ভবিষ্যৎ কী হবে—সেটা অজানা।
 
       
                 
                
 
                                                  
                                                  
                                                  
                                                  
                                                 