গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে সেনাবাহিনীর ১৫ কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার সরকারি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি বলেছে, এই পদক্ষেপ বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
বুধবার (২২ অক্টোবর) অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ এশিয়ার অফিস তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানায়। সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার এটি প্রথম উদাহরণ। এটি ভুক্তভোগীদের জন্য জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার দিকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বিবৃতিতে বিচারিক প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডে পরিচালনার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে। তারা বলেছে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আইনি প্রক্রিয়া অবশ্যই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। পাশাপাশি এই মামলা বেসামরিক আদালতে পরিচালনা করা উচিত এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বাধ্যবাধকতার আলোকে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই মামলাগুলোতে অভিযোগ করা হয়েছে, তারা বিগত সরকারের সময়ে গুম, নির্যাতনসহ বিভিন্ন গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
আজ (বুধবার) সেই মামলাগুলোর একপর্যায়ে কর্মরত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এ ধরনের বিচারিক প্রক্রিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার মুহূর্ত। তারা আশা প্রকাশ করেছে, এই প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পরিচালিত হবে, যাতে ভবিষ্যতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
মানবাধিকার সংস্থাটি আরও বলেছে, গুম ও নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে দায়মুক্তির সংস্কৃতি ভাঙতে হলে এই ধরনের পদক্ষেপ অপরিহার্য। ভুক্তভোগীদের পরিবারের জন্য এটি ন্যায়বিচারের পথে একটি আশার আলো।