Image description

স্বর্ণের দাম গত সোমবার ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল। কিন্তু এর পরের দুই সেশনে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় পতন ঘটে। দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে সবার দৃষ্টি এখন মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি তথ্যের দিকে।

শুক্রবার সকালেও মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে স্বর্ণ ও রুপার দামে পতন লক্ষ্য করা গেছে। বিনিয়োগকারীরা এখন নজর রাখছেন আজ প্রকাশিত হতে চলা মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি তথ্যের দিকে, যা বাজারে দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিন এমসিএক্স-এ ডিসেম্বর ডেলিভারির স্বর্ণ ফিউচার ০.৪৪ শতাংশ কমে প্রতি ১০ গ্রামে ১,২৩,৫৫২-এ নেমে আসে। অপরদিকে, রুপার ডিসেম্বর ফিউচার ০.৯৮ শতাংশ কমে প্রতি কেজিতে ১,৪৭,০৫২-এ লেনদেন হয়।

বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, নয় সপ্তাহ ধরে চলা স্বর্ণের উর্ধ্বমুখী ধারা ভাঙতে চলেছে, কারণ ব্যাপক বিক্রির চাপে রেকর্ড উচ্চতা থেকে দাম নামছে।

তাদের বক্তব্য, মূল্যায়ন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। পাশাপাশি মার্কিন-চীন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদ এবং ডলারের শক্তিশালী অবস্থানও স্বর্ণের দামে চাপ তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকরা আরও বলেন, বাজারের নজর এখন মার্কিন ভোক্তা মূল্য সূচক রিপোর্ট, সম্ভাব্য সরকারি শাটডাউন সংক্রান্ত আপডেট, এবং আগামী সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের দিকে। এর আগে চলতি সপ্তাহেই স্বর্ণ গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে বড় একদিনের পতন দেখেছে—একই দিনে ৫ শতাংশের বেশি কমেছে দাম।

যদিও সাম্প্রতিক সংশোধনের পরও, এ বছর এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মূলত বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে।

আন্তর্জাতিক বাজারে শুক্রবার ভোরে স্পট গোল্ড ০.২ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৪,১১৮.৬৮ ডলার-এ পৌঁছেছে, যা টানা দশ সপ্তাহের পর প্রথম সাপ্তাহিক পতন। এই সপ্তাহে স্বর্ণের দাম প্রায় ৩ শতাংশ কমেছে যা মে মাসের পর সর্বাধিক সাপ্তাহিক পতন।

একই সঙ্গে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হওয়ায় স্বর্ণের দামে চাপ পড়েছে, কারণ ডলার সূচক টানা তৃতীয় দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। শক্তিশালী ডলার অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য স্বর্ণকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলে।

মার্কিন সিপিআই রিপোর্টে সেপ্টেম্বর মাসের মূল মুদ্রাস্ফীতি হার ৩.১ শতাংশে স্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই রিপোর্টটি আগেই সাময়িক সরকারি শাটডাউনের কারণে বিলম্বিত হয়েছিল।

এছাড়া বিনিয়োগকারীরা ধারণা করছেন, আগামী সপ্তাহে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমাতে পারে। সাধারণত, সুদের হার কমলে স্বর্ণের চাহিদা বাড়ে, কারণ এতে এই বিনিয়োগ-ফলহীন সম্পদটির সুযোগমূল্য কমে যায়।