জ্বর-সর্দিতে ভুগছেন, তবুও ব্যাট হাতে যেন লড়াকু সৈনিক। এমনই এক দিনে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ইনিংস খেললেন সাইফ হাসান, আর তার পাশে থেকে লড়লেন সৌম্য সরকার। দুজনের গড়া ১৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই বাংলাদেশ গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজজয়ী ভিত্তি।
মিরপুরের ঘূর্ণিময় উইকেটে সাইফের ব্যাটে আসে ৮০, সৌম্যের ব্যাটে ৯১ রান। এই জুটির ওপর ভর করেই বাংলাদেশ তুলেছিল ২৯৬ রান, যা ক্যারিবীয়দের জন্য হয়ে যায় নাগালের বাইরে। ম্যাচ শেষে সৌম্য তাই সতীর্থের প্রশংসায় ভাসালেন সাইফকে—
‘ও (সাইফ) সত্যিই দারুণ ব্যাট করেছে। ওর শট সিলেকশন খুব ভালো ছিল। মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল, কিন্তু ও সবসময় যোগাযোগ রাখছিল, কথা বলছিল। যেভাবে ও কষ্ট সামলে খেলেছে, সেটা কৃতিত্ব পাওয়ার মতোই,’ বলেন সৌম্য।
তিন দিন ধরে জ্বরে ভুগলেও সাইফ থামেননি। ব্যাট হাতে পাশে থাকা সৌম্যের ভূমিকার কথাও ভুলেননি তিনি, ‘দাদা (সৌম্য) আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন আজ। তিন দিন ধরে আমার জ্বর, ঠান্ডা ছিল। আমি আগেও দাদার সঙ্গে ‘এ’ দলে, রংপুর দলে খেলেছি—তাই ওর সঙ্গে খেলতে সবসময়ই স্বস্তি লাগে,’ বলেন সাইফ।
সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপও জানালেন এই তরুণ ওপেনার, তবে দলের জয়ই তার কাছে বড়, ‘অবশ্যই একটা আক্ষেপ আছে শতরানের। আমরা দুজন সেট ছিলাম। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—আমরা দলকে জিতিয়েছি। ভবিষ্যতে এমন সুযোগ পেলে শতরানও করতে চাই।’
অন্যদিকে, সৌম্যের চোখ ছিল কেবল দলীয় সাফল্যে। ব্যক্তিগত মাইলফলক নয়, দল জেতানোটাই তাঁর কাছে বড় পুরস্কার, ‘না, শতরান না পাওয়ায় কোনো আক্ষেপ নেই। উইকেটটা কঠিন ছিল, তবুও আমরা দারুণ জুটি গড়েছি। শতরান করলে ভালো লাগত, কিন্তু দলের জয়টাই আসল।’
ওয়ানডে সিরিজে সৌম্যের রান ১৪০, গড় ৪৬.৩৭—স্ট্রাইক রেট ৭৭.৩৫। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারের হতাশা কাটিয়ে শেষ ম্যাচে তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ফেরে আত্মবিশ্বাস। মিরপুরের টার্নিং ট্র্যাকে তিনি ভরসা রেখেছিলেন রিভার্স সুইপে,
‘এই উইকেটে ব্যাট করা কঠিন, তবে বিশ্বাস রাখতে হয় নিজের দক্ষতার ওপর। রিভার্স সুইপটাই আমার কাছে সবচেয়ে কার্যকর মনে হয়েছে,’ বলেন সৌম্য।
এই ইনিংসে সাইফকেও দেখা গেছে একই শট খেলতে। উইকেট ছিল আগের দুই ম্যাচের মতোই ঘূর্ণিময়, তবুও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন দুই ওপেনার। সাইফ বলেন, ‘উইকেট আগের মতোই ছিল। আমরা শুধু ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলেছি, সেটাই পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।’