Image description
 

নিত্যপণ্যের বাজারে যখন আগুন, তখন ঠাকুরগাঁওয়ের সবজি চাষিদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে বাম্পার ফলন। আগাম সবজি, বিশেষ করে মূলার ব্যাপক সরবরাহের কারণে পাইকারি বাজারে দাম নেমে এসেছে তলানিতে। এক কেজি তেল কিনতে কৃষককে ৪০ কেজি মুলা বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

বর্তমানে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫-৬ টাকায়। আর এক কেজি ভোজ্যতেলের মূল্য প্রায় ২শ টাকা।

বুধবার সকালে সদর উপজেলার খোঁচাবাড়ি হাটে এমন চিত্র দেখা যায়। ৫-৬ টাকা দরে কেজিপ্রতি মুলা বিক্রি হয়েছে। শুধু মুলাই নয়, ফুলকপির দামও নিম্নমুখী; গত সাত দিন আগে ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন নামছে ৪০ টাকায়। এছাড়া বাঁধাকপি, বেগুনসহ অন্যান্য সবজির দামও নিম্নমুখী।

কৃষকরা বলছেন, দাম এতটাই কম যে, মুলা তুলতে শ্রমিক খরচও উঠছে না। ফলে লোকসান এড়াতে বহু কৃষক জমি থেকে ফসল তুলছেন না; ক্ষেতেই পচছে কন্দাল ফসল মুলা। কৃষক রইচউদ্দিনের ক্ষোভ, এক বিঘা জমির মুলা বিক্রি করে যা আসছে, তা একজন শ্রমিক ও ভ্যান ভাড়ার চেয়েও কম!

সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম তো লোকসান এড়াতে জমিতে আগাছা নাশক রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, কামলা খরচ এবং হাট পর্যন্ত নেওয়ার খরচও উঠছে না।

শহিদুলের কথার রেশ টেনে কৃষক মলিন চন্দ্র রায় আক্ষেপ করে বলেন, হামরা কৃষক হুনো আহাম্মকের দল! যতই লোকসান খাই, তাহু হামাক আবাদ করিবা হবে। হামার কি উপায় আছে? এক কেজি মুলা বিক্রি করে এক কাপ চায়ের দামও না ওঠা। ফলে তাদের উৎপাদন খরচ ও পারিশ্রমিক উঠছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসিরুল আলম জানিয়েছেন, বাজারে অতিরিক্ত সবজি সরবরাহ হওয়ায় কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। আগাম সবজি, বিশেষত মুলার বাম্পার ফলন ও অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় কৃষকের চরম লোকসান হচ্ছে। ৪০ কেজি মুলায় ১ লিটার তেলের দাম হওয়ায় কৃষকের খরচ ও পারিশ্রমিক না ওঠানোয় খেতেই পচছে ফসল।

অন্যদিকে, ঠাকুরগাঁও শহরের গোবিন্দনগর কাঁচামাল ব্যবসায়ী শিল্পী ইসলাম বলেন, শুধু সবজির দাম কম। কিন্তু মাছ, মাংস, ডিমসহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।