Image description
 

বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের কাছে চিয়া বীজ এক অনন্য ‘সুপারফুড’। ওজন কমানো থেকে শুরু করে হার্টের যত্ন—ফাইবার, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও নানা পুষ্টিগুণে ভরপুর এই বীজকে অনেকে রোজকার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করছেন। গবেষণা বলছে, চিয়া সিড রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, হৃদযন্ত্র সুরক্ষা, হজমশক্তি উন্নতকরণ এবং ত্বকের যত্নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু বিশেষ কিছু শারীরিক অবস্থায় এই বীজ খাওয়া বরং বিপদ ডেকে আনতে পারে।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের যেসব মানুষের চিয়া সিড খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত—

১. হজমজনিত সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিরা

 

চিয়া বীজে উচ্চমাত্রার ফাইবার পেটে গিয়ে জল শোষণ করে ফুলে ওঠে। আইবিএস, গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেট ফোলাভাবের সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি হজমের অসুবিধা বাড়াতে পারে। বিশেষ করে ভিজিয়ে না খেলে সমস্যা আরও তীব্র হতে পারে।

 

২. উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাওয়া রোগীরা

চিয়া সিড প্রাকৃতিকভাবে রক্তচাপ কমানোর ক্ষমতা রাখে। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধ খাওয়া রোগীদের ক্ষেত্রে এটি রক্তচাপ অতিরিক্ত কমিয়ে দিতে পারে, যার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এমনকি অজ্ঞান হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

৩. ব্লাড থিনার সেবনকারীরা

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ চিয়া সিড রক্তকে পাতলা করার ক্ষমতা রাখে। যারা ব্লাড থিনার ওষুধ খাচ্ছেন, তাদের শরীরে অতিরিক্ত রক্তপাত বা সহজে ছোপ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

৪. বীজজাতীয় খাবারে অ্যালার্জি থাকা ব্যক্তিরা

তিল, সরষে বা ফ্ল্যাক্স সিডে অ্যালার্জি থাকলে চিয়া বীজ থেকেও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ত্বকে ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট বা জ্বর দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৫. ডায়াবিটিস রোগীরা

চিয়া সিড রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করলেও, ডায়াবিটিসের ওষুধের প্রভাব বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। তাই ডায়াবিটিস রোগীদের খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৬. কিডনি রোগীরা

চিয়া বীজে থাকা ফসফরাস ও পটাশিয়াম কিডনির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, বিশেষ করে যাদের কিডনি ইতিমধ্যেই দুর্বল। অতিরিক্ত সেবনে কিডনির ক্ষতি ত্বরান্বিত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তালিকার বাইরে থাকা সুস্থ মানুষ চিয়া সিড খেতে পারেন, তবে পরিমাণ মেনে এবং খাওয়ার আগে ভিজিয়ে নেওয়া সবচেয়ে ভালো। সুপারফুড হলেও, মাত্রা ছাড়া বা অযথা সেবন করলে চিয়া সিড উপকারের বদলে শরীরে বিপদ ডেকে আনতে পারে।