
মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে আনা শতাধিক গরু পাচারকে কেন্দ্র করে দুটি ‘সন্ত্রাসী’ বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এতে একটি বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ নবী (৪২) নিহত হয়েছেন। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত চারজন আহত হন বলে জানা গেছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের চৌধুরী খামারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ নবী একই এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে চোরাই পথে আনা শতাধিক গরু বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ নবী বাহিনীর সঙ্গে আজিজুল হক বাহিনীর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সন্ধ্যায় গোলাগুলি শুরু হয়। এতে মোহাম্মদ নবীসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ মোহাম্মদ নবীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু নিয়ে আসছে পাচারকারীরা। এসব গরু প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টের পাহাড়ি এলাকায় রেখে দেওয়া হয়। পরে রামুর গর্জনিয়া-উখিয়ার ঘোনা সড়ক দিয়ে কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও ও চকরিয়া উপজেলা হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়। এসব গরু পাচারে কয়েকটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলকে ব্যবহার করে পাচারকারীরা। এ জন্য প্রতিটি গরুর জন্য সন্ত্রাসী বাহিনীকে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হয়।
মাঝেমধ্যে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশের অভিযানে এসব চোরাই গরু ও বিভিন্ন পণ্য জব্দ হয়। সম্প্রতি গরুসহ মাদকের চালান নিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে গোলাগুলিতে রামু উপজেলায় গরু চোরাচালানের অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমন কান্তি চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ মোহাম্মদ নবীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিরা কে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। রাতে সন্ত্রাসীদের আস্তানা থেকে দুটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’