অপরাধ তদন্তে প্রযুক্তির অভিনব ব্যবহারের এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ফিনল্যান্ড পুলিশ। চুরি যাওয়া একটি গাড়ির ভেতর পাওয়া মৃত একটি মশার শরীর থেকেই শনাক্ত করা হয়েছে গাড়ি চুরির সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে।
ফিনিশ পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া গাড়িটি বিস্তারিতভাবে তল্লাশি করার সময় ভেতরে একটি মৃত মশা পাওয়া যায়। প্রথমে এটি তেমন গুরুত্ব না পেলেও পরবর্তী পরীক্ষায় ঘটনাটি তদন্তে মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
মশার শরীরেই ছিল মানব রক্ত
পরীক্ষায় দেখা যায়, মশাটি মৃত্যুর আগেই মানুষের রক্ত পান করেছিল, এবং সেই রক্ত তার শরীরের ভেতরে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছে। ফলে মশাটিকে কার্যত একটি জৈবিক ফরেনসিক প্রমাণের ধারক (biological container) হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
রক্ত থেকে ডিএনএ, ডিএনএ থেকে সন্দেহভাজন
ফরেনসিক বিজ্ঞানীরা মশার শরীর থেকে ওই রক্ত সংগ্রহ করে ডিএনএ নিষ্কাশন করেন। পরে প্রচলিত জেনেটিক প্রোফাইলিং পদ্ধতিতে রক্তের ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হয়।
বিশ্লেষণের ফলাফল সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলে যায়, যা সরাসরি তাকে গাড়ি চুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করে।
ফরেনসিক বিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত
এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, অপরাধস্থলে পাওয়া পরোক্ষ বা অপ্রচলিত জৈবিক চিহ্নও গুরুত্বপূর্ণ ফরেনসিক প্রমাণ হতে পারে। শুধু আঙুলের ছাপ, চুল বা কাপড়ের আঁশ নয়—এখন ক্ষুদ্রতম প্রাণীর মাধ্যমেও অপরাধী শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিএনএ সংরক্ষণ ও বিশ্লেষণ প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এ ধরনের তদন্ত এখন বাস্তবসম্মত হয়ে উঠেছে। আধুনিক ফরেনসিক বিজ্ঞানে সামান্য একটি তথ্যই বড় সূত্রে পরিণত হতে পারে।
তদন্তে ক্ষুদ্র প্রমাণের বড় ভূমিকা
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হলো—অপরাধ তদন্তে আর কোনো প্রমাণই তুচ্ছ নয়। একটি মৃত মশাও এখন অপরাধ উদ্ঘাটনের চাবিকাঠি হতে পারে।