Image description
 

সীমান্ত সংঘাত নিরসনে ইস্তাম্বুলে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত বৃহঃস্পতিবার তৃতীয় দফায় শান্তি আলোচনায় বসেছিল পাকিস্তার ও আফগানিস্তান। তবে, এবারো স্থায়ী কোনো ফলাফল আসেনি দেশদুটির মধ্যে বরং ব্যর্থতার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করেছে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের প্রতিনিধিরা।

 

শুক্রবার কোনও সমাধান ছাড়াই আলোচনার সমাপ্তির কিছুক্ষণ পরেই, পাকিস্তানের সীমান্তে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং অন্যরা আহত হয়েছেন।

 

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘তালেবান আশা করেছিল ইসলামাবাদ ‘একটি মৌলিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য বাস্তবসম্মত এবং বাস্তবায়নযোগ্য দাবি উপস্থাপন করবে’।

মুজাহিদ দাবি করেছেন, পাকিস্তানের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অসহযোগী মনোভাব প্রদর্শনের কারণে কোনো ফলাফল হয়নি। তিনি বলেছেন, "আলোচনা চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান তার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্ত দায়িত্ব আফগান সরকারের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বা তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণে কোনও আগ্রহ দেখায়নি।’

 

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেন তালেবানরা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেনি এবং তা অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘একটা পরিপূর্ণ অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আমাদের সংলাপ অনির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই ।’

আসিফ আরো বলেছেন, ‘আমরা সন্ত্রাসের মূলোৎপাটনের জন্য আমরা আফগানিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছিলাম, এসময় মধ্যস্থতাকারীদের পাশাপাশি আফগান প্রতিনিধিরাও আমাদের অবস্থানের সঙ্গে সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু যখনই শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রসঙ্গ এলো, তখন তারা পিছিয়ে গেলেন।’

এছাড়া পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, ইসলামাবাদ, তালেবান সরকারের এমন কোনও পদক্ষেপকে কখনোই সমর্থন করবে না যা আফগান জনগণ বা প্রতিবেশী দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নয়"।

পাকিস্তান দাবি করছে তালেবান কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় করা ২০২১ সালের দোহা শান্তি চুক্তির প্রতিশ্রুতি পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তান বিশ্বাস করে কাবুলের কর্তৃপক্ষ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিকে আশ্রয় দিচ্ছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের টিটিপি, পাকিস্তান জুড়ে বেশ কিছু মারাত্মক হামলা চালিয়েছে, যার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে একাধিক মারাত্মক বিমান হামলা শুরু করেছে। তবে তালেবান টিটিপি গোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করেছে।

জাতিসংঘের মতে, অক্টোবরের শুরু হওয়া যুদ্ধের সময়, সীমান্তের আফগানিস্তানের ৫০ জন বেসামরিক লোক মারা গেছে এবং ৪৪৭ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে তালেবানদের হামলায় তাদের ২৩ জন সৈন্য নিহত এবং ২৯ জন আহত হয়েছে, তবে বেসামরিক লোকের হতাহতের কথা উল্লেখ করেনি।