Image description
 

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির ১২ নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর ও বের কালোয়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

 

ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাজীর ভাই সোহেল রানা, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি ওলি জোয়াদ্দার, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জমারত সরদার, দপ্তর সম্পাদক মিন্টু খন্দকার এবং আওয়ামী লীগ সমর্থক ইয়ারুলসহ বেশ কয়েকজন হামলা ও লুটপাট চালায়। এতে কয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুবদল নেতা সালমান এফ রহমান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রাশিদুল ইসলামের নেতৃত্বে অন্তত ১২টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, প্রায় ৪০ লাখ টাকার নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, গবাদিপশু ও আসবাবপত্র লুট হয়েছে।

 

স্থানীয়রা জানান, কালোয়া বাজার ও পদ্মা নদীসংলগ্ন এলাকায় আধিপত্য নিয়ে কয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি বকুল বিশ্বাস ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা রাশিদুল ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে গত ১ নভেম্বর উভয়পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত দুইজন আহত হন এবং বেশ কিছু ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। ওই ঘটনার পর দুই পক্ষই থানায় মামলা করে।

 

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বকুল বিশ্বাসের অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতারা রাশিদুল গ্রুপের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শনিবার দুপুরে সরেজমিনে সুলতানপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, যুবদল নেতা সালমান এফ রহমানের পাকা বাড়ির কাচের জানালা ভাঙা, আসবাবপত্র এলোমেলো এবং গোয়ালঘর খালি। সাবমার্সিবল পাম্পটিও উধাও।

সালমানের মা শেফালী খাতুন বলেন, ‘ভয়ে আমার ছেলে মাসখানেক ধরে বাড়িতে থাকেনা। শুক্রবার মাগরিবের পর সোহেল, ইয়ারুল, মাসুম, নাজমুল, ফিরোজসহ অনেকে অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। ঘরের জানালা, আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দুইটি গরু লুট করে নিয়ে যায়।

 

সালমানের বাবা ও বিএনপি নেতা মতিউর রহমান বলেন, আমরা বিএনপি করি বলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা চাঁদা না পেয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

বের কালোয়া গ্রামেও একই ধরনের ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় গৃহবধূ লিপি খাতুন বলেন, সন্ধ্যার পর আওয়ামী লীগের সোহেল, ইয়ারুল, চুন্নু, জমারতসহ শতাধিক লোক গ্রামে হামলা করে। আমার বাড়িসহ অনেকের বাড়িতেই লুটপাট চালায়। এতে আমার এক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা বকুল বিশ্বাস বলেন, রাশিদুল ও সালমান পদ্মায় চাঁদাবাজি করে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করছে। তারা আমার লোকজনের ওপর বারবার হামলা চালাচ্ছে। শুক্রবার তারা ফের হামলা করলে আমার লোকজন পাল্টা ধাওয়া দেয়। তবে কারও বাড়িতে ভাঙচুর বা লুটপাট করা হয়নি।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এক পক্ষ অপর পক্ষের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।