Image description
 

বিশ্ববাজারে আকরিক লোহার দাম সপ্তাহজুড়ে বড় পতনের মুখে পড়েছে। চীনে ইস্পাত উৎপাদন কমে যাওয়া এবং দুর্বল অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ ধাতুর দাম চাপে রয়েছে।

 

শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) দিন শেষে চীনের দালিয়ান কমোডিটি এক্সচেঞ্জে জানুয়ারি মেয়াদের আকরিক লোহার ফিউচার চুক্তির দাম ১.১৬ শতাংশ কমে প্রতি মেট্রিক টন ৭৬৬ ইউয়ান (১০৭.৫৪ ডলারে) এসে দাঁড়িয়েছে। পুরো সপ্তাহে এই দাম প্রায় ৩.৯৫ শতাংশ হ্রাস পাওয়ার পথে রয়েছে।

একই চিত্র দেখা গেছে সিঙ্গাপুর এক্সচেঞ্জেও। সেখানে ডিসেম্বরের বেঞ্চমার্ক আকরিক লোহার দাম শুক্রবার ১.৭৯ শতাংশ কমে প্রতি টন ১০২.০৫ ডলার হয়েছে, যা পুরো সপ্তাহে প্রায় ৩.৯ শতাংশের পতন।

 

অ্যানজেড ব্যাংকের বিশ্লেষকদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চীন সরকার ইস্পাত খাতে অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই খাতে দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধি লাভজনকতায় চাপ সৃষ্টি করায় দেশটি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছে। স্টিলহোমের তথ্য অনুসারে, উত্তর চীনের প্রধান ইস্পাত উৎপাদন অঞ্চলে ব্লাস্ট ফার্নেসে উৎপাদন কমায় ইস্পাতের মোট উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।

 

চীনা ব্রোকার গ্যালাক্সি ফিউচারস জানিয়েছে, রিয়েল এস্টেট, অবকাঠামো ও উৎপাদন খাতে চাহিদা কমে যাওয়ায় তৃতীয় প্রান্তিকে ইস্পাতের ব্যবহার হ্রাস পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস, চতুর্থ প্রান্তিকে এই পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা নেই।

আকরিক লোহার দরপতন সত্ত্বেও দালিয়ান এক্সচেঞ্জে কোকিং কয়লা ও কোকের দাম সামান্য বেড়েছে। সাংহাই ফিউচার এক্সচেঞ্জে বেশিরভাগ ইস্পাত পণ্যের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে:

  • রিবার: দাম বেড়েছে ০.৪৩ শতাংশ।

     
  • ওয়ার রড: দাম বেড়েছে ০.০৬ শতাংশ।

     
  • স্টেইনলেস স্টিল: দাম বেড়েছে ০.০৮ শতাংশ।

     
  • হট-রোল্ড কয়েল: দাম কমেছে সামান্য ০.০৬ শতাংশ।

     

অন্যদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) ইস্পাত খাত রক্ষায় জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্জ ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে 'অর্থনৈতিক দেশপ্রেম' জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন। সম্প্রতি ইউরোপীয় কমিশন শুল্কমুক্ত ইস্পাত আমদানির কোটা অর্ধেকে নামিয়ে এনে কোটার বাইরে আমদানির শুল্ক ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

এদিকে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আর্সেলরমিত্তাল তৃতীয় প্রান্তিকে প্রত্যাশার চেয়ে ভালো আয় করেছে এবং ২০২৬ সালের জন্য ইতিবাচক পূর্বাভাস দিয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি স্বীকার করেছে যে এ সময়ে সামগ্রিক চাহিদা দুর্বল ছিল এবং বাজারে নতুন করে মজুত বাড়ানোর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।