Image description

নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রায় ৫০ লাখ নিবন্ধিত ভোটার আজ মঙ্গলবার নগরের পরবর্তী মেয়র নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোট দেবেন। এদিন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স এলাকার ফ্র্যাঙ্ক সিনাত্রা স্কুল অব দ্য আর্টস হাইস্কুলে স্থাপিত একটি ভোটকেন্দ্রে নিজের ব্যালটে ভোট দিয়েছেন। তবে রয়টার্সের তোলা ছবিতে দেখা যায়, মামদানির হাতে ব্যালট পেপারের খামে বাংলা ভাষায় লেখা রয়েছে। 

ছবিতে স্পষ্ট দেখা যায়, ব্যালট পেপারের খামে বাংলায় লেখা- ‘ব্যালটের গোপনীয়তা রক্ষার খাম’। এতে আরও দেখা যায়, ‘ভোট দেবার নিয়মাবলীর জন্য খামের ভিতরে দেখুন’ লেখা রয়েছে। 

 
 

নিউইয়র্ক সিটি নির্বাচনে বহু ভাষার ব্যবহার নতুন নয়। নগরটির জনসংখ্যার বড় অংশই অভিবাসী হওয়ায় ভোটারদের সুবিধার্থে ব্যালট ও নির্দেশনায় একাধিক ভাষা ব্যবহার করা হয়। এবারও বাংলা, স্প্যানিশ, চাইনিজসহ আরও কয়েকটি ভাষায় ব্যালট পেপার প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন।

এই ছবিটি তুলেছেন রয়টার্সের ফটোগ্রাফার কাইলি কুপার।

 

এদিকে নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনের তথ্য অনুযায়ী, ৯ দিনে আগাম ভোট পড়েছে ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৩১৭টি। এই হার ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি।

সর্বশেষ রিয়েলক্লিয়ারপলিটিকস জরিপে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানির প্রতি ৪৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার সমর্থন জানিয়েছেন। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমোর প্রতি সমর্থন রয়েছে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটারের। এই জরিপ অনুযায়ী কুমোর চেয়ে ১৪ দশমিক ৩ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন জোহরান। রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ার প্রতি সমর্থন রয়েছেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

তবে গতকাল সোমবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুমোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন রিপাবলিকান দলীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। এই দুই প্রভাবশালীর শেষ মুহূর্তের সমর্থন ভোটারদের মন পরিবর্তন করবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

 

 

 

আমরা ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে: মামদানি

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ভোট দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে। অতীতের রাজনীতিকে বিদায় জানাতে যাচ্ছি।’

মামদানি আশাবাদী ভঙ্গিতে বলেন, ‘এই নির্বাচন শুধু নেতৃত্ব বদলের নয়, বরং রাজনীতির চরিত্র বদলেরও সূচনা।’

কিছু জরিপে দেখা গেছে, তিনি হয়তো এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ নিউইয়র্কবাসীর পূর্ণ সমর্থন পাননি। এ বিষয়ে মামদানি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বিজয় নিজেই এক ধরনের জনসমর্থনের প্রতীক।’

সাংবাদিকেরা তাকে জিজ্ঞেস করেন, যদি ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হয়ে নিউইয়র্ক সিটির ফেডারেল তহবিল বন্ধের হুমকি বাস্তবায়ন করেন, তখন তিনি কী করবেন। উত্তরে মামদানি বলেন, ‘আমি শহরের প্রাপ্য প্রতিটি ডলারের জন্য লড়ব।’

এদিকে ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্টস অব আমেরিকার (ডিএসএ) সদস্য জোহরান মামদানি তার ঘোষিত নীতির মাধ্যমে তরুণ ও উদার ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। যেমন সবার জন্য বিনা মূল্যে শিশুযত্ন, বিনা মূল্যে বাস–সেবা এবং বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট থাকা।

উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক নগরে প্রতি চার বছর পর মেয়র নির্বাচন হয় এবং কোনো ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে মেয়র থাকতে পারেন।