Image description

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা গতকাল সোমবার বলেছেন, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে ঐকমত্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করবে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, নতুন সরকার সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত শনিবার সিরিয়ার নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করা হয়েছে। এই সরকারের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন ২৩ জন। তবে এতে কোনো প্রধানমন্ত্রী রাখা হয়নি। আল-শারার গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) অভিযানে সিরিয়ার দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার তিন মাসেরও বেশি সময় পর এই মন্ত্রিসভা গঠন করা হলো।

এদিকে, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি প্রশাসন সিরিয়ার সরকারের বৈধতা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, এই মন্ত্রিসভা ‘দেশের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে না।’ এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে আল-শারা বলেন, নতুন সরকারের লক্ষ্য দেশ পুনর্গঠন করা। তবে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘এটি সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে না।’

দামেস্কে ঈদুল ফিতরের নামাজের পর সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ আয়োজিত এক সমাবেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা যে পদক্ষেপই নিই না কেন, তা সব সময় ঐকমত্যে পৌঁছাবে না—এটি স্বাভাবিক—তবে আমাদের যতটা সম্ভব ঐকমত্যে পৌঁছাতে হবে।’

প্রায় ১৪ বছরের গৃহযুদ্ধের পর কর্তৃপক্ষ সিরিয়ার অর্থনীতি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় একত্রিত ও পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। শারার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সমর্থক এবং তাঁর অনুসারী অন্যান্য ব্যক্তিরা নতুন মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ পদ পেয়েছেন। শারা বলেন, মন্ত্রীদের তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হয়েছে, ‘কোনো বিশেষ আদর্শিক বা রাজনৈতিক প্রবণতা ছাড়াই।’

নতুন সরকারে সিরিয়ার সংখ্যালঘু গোষ্ঠী থেকে চারজন মন্ত্রী রয়েছেন—একজন খ্রিষ্টান, একজন দ্রুজ, একজন কুর্দি এবং একজন আলভী। তবে তাদের কাউকেই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর দেওয়া হয়নি। শারা বলেন, নতুন সরকারের গঠনে ‘সিরিয়ার সমাজের বৈচিত্র্য’ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। যদিও ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য কোটা পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করে পরিবর্তে ‘অংশগ্রহণকে’ বেছে নেওয়া হয়েছে।

সমাবেশে শারা বলেন, ‘সিরিয়ার জন্য একটি নতুন ইতিহাস লেখা হচ্ছে...আমরা সবাই এটি লিখছি।’ এ মাসে শারা দেশের পাঁচ বছর মেয়াদি অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনকাঠামো পরিচালনার জন্য একটি সাংবিধানিক ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার গোষ্ঠী সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই খসড়া শারার হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে এবং সংখ্যালঘুদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।