
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে মিডটার্ম পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করার অভিযোগ উঠেছে। তার নাম সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী। তিনি গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে। অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি হলেও ছয় মাসেও প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত স্নাতকোত্তরের প্রথম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষায়। অভিযোগ রয়েছে, ওই পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেছেন সুরাইয়া ইয়াসমিন ঐশী। তিনি বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এখনো তদন্ত শেষ হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে, ঐশী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনের প্রভাব খাটিয়ে পরীক্ষায় অংশ না নিয়েই পাস করেন। তবে তার সহপাঠীরা দাবি করেছেন, তারা ঐশীকে মিডটার্ম পরীক্ষায় অংশ নিতে দেখেননি। গত বছরের ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় আবু সাঈদ মারা যাওয়ার পর থেকে ঐশী আত্মগোপনে রয়েছেন।
এ বিষয়ে খবরের কাগজের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে শুরুতে ঐশী ফোন রিসিভ করেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবি করেন। তার বক্তব্য এবং উপস্থিতির তথ্যে গরমিল হলে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে অভিযুক্ত শিক্ষক গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দপ্তরের পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেরোবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক আমিন আল আমিন। খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘যারা জুলাই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের নেত্রী কীভাবে পরীক্ষা না দিয়ে পাস করেন? এখানে শিক্ষকদেরও সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও দেখেছি, অনেক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কিন্তু কোনো ফল আসেনি। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের ওপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন। আমরা চাই দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক, সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম জীবন বলেন, ‘প্রতিবেদন প্রায় তৈরি আছে। এখন জমা দেওয়ার বাকি। দুই-এক দিনের মধ্যে জমা দেওয়া হবে।’