Image description

দেশে নিম্নমানের খাদ্যপণ্য উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাতের অভিযোগে নেসলে বাংলাদেশ ও মেঘনা গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ঢাকার নিরাপদ খাদ্য আদালত।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত সাহারা বিথী নেসলে ও মেঘনা গ্রুপের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুটি পৃথক মামলায় এ আদেশ দেন। মামলাগুলোর বাদী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান।

এক মামলায় অভিযোগ করা হয়—বাংলাদেশের বাজারে নিম্নমানের কিটক্যাট চকলেট-কোটেড ওয়েফার বিক্রি করছে নেসলে বাংলাদেশ। এ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে— নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামান—এর বিরুদ্ধে।

খাদ্য পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই কিটক্যাট বাজারজাত করা হচ্ছে। সরকারি ল্যাবে পরীক্ষায় ওয়েফারে ২.৩২% অ্যাসিডিটি পাওয়া যায়, যা অনুমোদিত ১% মাত্রার চেয়ে বেশি। চকলেট আবরণে দুধের কঠিন পদার্থ ৯.৩১%, যা মানদণ্ডের ১২–১৪%–এর নিচে এবং দুধের ফ্যাট ১.২৩%, যা মান ২.৫–৩.৫% থেকে অনেক কম।

কামরুল হাসানের ভাষ্য— “উচ্চ অ্যাসিডিটি খাবারের পচন নির্দেশ করে। দুধের কঠিন পদার্থ কম থাকা মানে পণ্যটি প্রকৃত দুগ্ধজাত নয়।”

নেসলের কোম্পানি সচিব দেবব্রত রায় চৌধুরী দাবি করেন— কিটক্যাটের জন্য বিএসটিআই কোনো পৃথক মানদণ্ড প্রণয়ন করেনি। প্রতিটি আমদানিকৃত কনসাইনমেন্ট বিসিএসআইআর পরীক্ষার পরই কাস্টমস ছাড়পত্র দেয়। কোম্পানির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ ছাড়াই মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “৩২ বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করছি। এমন পরিস্থিতি ব্যবসার পরিবেশকে কঠিন করে তুলবে।”

একই দিনে অপর মামলায় মেঘনা সুগার রিফাইনারির প্রস্তুত করা চিনিতে নিম্নমান ও ক্ষতিকর উপাদান পাওয়ায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় কোম্পানিটির কর্ণধার ও মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের বিরুদ্ধে।

পরীক্ষায় দেখা যায়— চিনিতে সুক্রোজ ছিল ৭৭.৩৫%, যেখানে ন্যূনতম মান ৯৯.৭০%। সালফার ডাই-অক্সাইড পাওয়া গেছে ০.০৮ পিপিএম, যা স্বাস্থ্যসম্মত নয় এবং মানদণ্ডেই নিষিদ্ধ।

কামরুল হাসানের ব্যাখ্যা— “সালফার ডাই-অক্সাইড দিয়ে কৃত্রিমভাবে চিনি সাদা করা হয়। কম সুক্রোজ মানে চিনি নয়, বরং কৃত্রিম সুইটনার ব্যবহার করা হয়েছে।”

মেঘনা গ্রুপের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা হাবিব উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য দেননি।

দুটি মামলার পরবর্তী আদালত শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ ডিসেম্বর।