রাজনীতির অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভেতরের অস্থিরতা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা। দলটির আরও কয়েকজন শীর্ষ ও মাঝারি সারির নেতা পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
সূত্র জানায়, নীতিগত মতবিরোধ, দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অসন্তোষ এবং সাংগঠনিক দুর্বলতার অভিযোগ তুলে তারা পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। তবে এগুলো আনুষ্ঠানিক শব্দ হলেও মূলত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটে যাওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। জামায়াতের সঙ্গে জোট করাকে কেন্দ্র করেই আরও অন্তত ৫ থেকে ১০ জন পদত্যাগ করতে পারেন বলে জানা গেছে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদ সারোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনুভা জাবীন, যুগ্ম সদস্য সচিব নুসরাত তাবাসসুমসহ আরও কয়েকজন পদত্যাগ করতে পারেন। আগামীকাল রবিবার জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির সমঝোতা হলে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এনসিপির এক নেতা শনিবার রাতে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে জোট করা নিয়ে দলের মধ্যে কিছুটা বিভেদ দেখা দিয়েছে। এই বিভেদ দূর করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। কে পদত্যাগ করবে আর কে করবে না এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।’
এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা নির্বাচনী জোট গঠনের এই চূড়ান্ত মুহূর্তে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলটির নারী নেত্রীরা। গত বৃহস্পতিবার এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বাসায় নির্বাচনী জোটের সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে নারী নেত্রীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট হলে তারা (নারী নেত্রীরা) প্রয়োজনে একসঙ্গে দল থেকে পদত্যাগ করবেন। সেই কারণে এনসিপি বা আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
এছাড়াও, হাসিনা বিরোধী আন্দোলন বা অভ্যুত্থানের অন্যতম শীর্ষ নেতা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া ও মাহফুজ আলমও চান না জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠন করুক এনসিপি। কারণ নারীরা জোটবদ্ধ হয়ে ভেটো দিচ্ছেন। তাই জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিলে ‘জুলাই আন্দোলনের মূল শক্তি’ এনসিপির জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে।