ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর কার্যালয় গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী গভীর রাতে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজশাহী শহরে প্রবেশ করে। একই সময়ে এনসিপি’র নেতাকর্মীরাও পৃথক বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভে অংশ নিয়ে রাজপথে নেমে আসে।
একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা কুমারপাড়া এলাকায় অবস্থিত রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এস্কেভেটর দিয়ে ভবনটি গুঁড়িয়ে দেয়। এর আগেও গত বছরের ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছিল।
এদিকে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নগরীর জিরোপয়েন্টে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জিরোপয়েন্টে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। বক্তারা দাবি করেন, হত্যাকারীদের ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বক্তব্যে আরও বলা হয়, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণেই জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধারা একের পর এক হত্যার শিকার হচ্ছেন। এ সময় তারা ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন। জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে আর কোনো বিদেশি আধিপত্যবাদ বা দালালদের স্থান দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা। সমাবেশ চলাকালে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয়। পরে নিহত শরীফ ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করা হয়।