বরিশাল জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে বিএনপি পাঁচটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কৌশলগত কারণে একটি আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়নি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন ছয়টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। মাঠের তথ্য বলছে, ছয়টি আসনের প্রত্যেকটিতেই বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন প্রার্থীদের ভোটযুদ্ধ হবে।
বরিশাল-১ : বরিশাল-১ আসনটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন হেভিওয়েট নেতা জহিরউদ্দিন স্বপন। অন্যদিকে জামায়াত ইসলামী থেকে এ কে এম কামরুল ইসলাম খান, ইসলামী আন্দোলন থেকে মেহেদী হাসান রাসেল মনোনয়ন পেয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনি ময়দানে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর বাইরে অন্য কোনো প্রার্থীর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে না। ভোটারদের ভাষ্য অনুযায়ী, এ আসনে বিএনপি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী জিতবেন। জামায়াতের প্রার্থী থাকবেন দ্বিতীয় স্থানে।
বরিশাল-২ : উজিরপুর ও বানারীপাড়া নিয়ে গঠিত বরিশাল-২ আসনেও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু। এ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী আবদুুল মান্নানের তেমন কোনো পরিচিতি নেই বললেই চলে। যার কারণে অসম লড়াইয়ের সম্ভাবনা বেশি। তবে এই হিসাবে নতুনত্ব আনতে পারেন গোলাম ফারুক অভি। তার ঘনিষ্ঠজনরা প্রচার করছেন বরিশাল-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তিনি। অভি নির্বাচনে এলে বিএনপির প্রার্থী সান্টুকে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে।
বরিশাল-৩ : বাবুগঞ্জ ও মুলাদী নিয়ে গঠিত বরিশাল-৩ আসনে এখনো বিএনপির প্রার্থী দেওয়া হয়নি। হেভিওয়েট দুই প্রার্থী স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও জয়নুল আবেদীনের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে এই কৌশলগত অবস্থান হতে পারে। এ আসনে বিএনপি আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদকে সমর্থন দেওয়া হবে বলে চাউর রয়েছে। অবশ্য বিএনপি প্রার্থী ঠিক না হওয়ায় এখন পর্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন জামায়াত প্রার্থী জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ বলেন, এ আসন জোটের কোনো প্রার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। বাবুগঞ্জ ও মুলাদী বিএনপি বিএনপি অধ্যুষিত এলাকা। এখানে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত।
বরিশাল-৪ : হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রাজিব আহসান ও জামায়াতের প্রার্থী আবদুুল জব্বারের মধ্যে ভোটযুদ্ধ হবে। বিএনপি অধ্যুষিত এ আসনে রাজিব আহসান সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। তবে প্রচারণায় এগিয়ে আছেন জামায়াত প্রার্থী।
বরিশাল-৫ : বরিশাল সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি বিএনপির দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হলেন পাঁচবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য মজিবর রহমান সরোয়ার। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি মুয়াযযম হোসাইন হেলালের।
বরিশাল-৬ : বাকেরগঞ্জ পৌর ও উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আবুল হোসেন খান। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুন্নবী তালুকদারের। আবার এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের সঙ্গেও হতে পারে বলে প্রচার আছে।
