Image description

চুয়াডাঙ্গার সংসদীয় আসন মাত্র দুটি। আর এ দুটি আসনেই বিএনপির সঙ্গে লড়াই হবে জামায়াতে ইসলামীর। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে (তিনটি ইউনিয়ন বাদে চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা) প্রার্থী হয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফুজ্জামান (ধানের শীষ), জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল (দাঁড়িপাল্লা) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা সহসভাপতি মাওলানা জহুরুল ইসলাম (হাতপাখা)। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে (দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা এবং সদরের তিনটি ইউনিয়ন) রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি, দলের কেন্দ্রীয় উপকোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান (ধানের শীষ), জেলা জামায়াতের আমির, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন (দাঁড়িপাল্লা) ও ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান সজীব (হাতপাখা)।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দুটি আসনেই বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই হবে জামায়াত প্রার্থীর। ভোটের বিবেচনায় চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপি এগিয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। যদিও দুই আসনের প্রত্যেক প্রার্থীই নিজের বিজয় নিশ্চিত বলে দাবি করছেন।

ভোটের মাঠে প্রার্থীদের তৎপরতা সম্পর্কে জানা গেছে, সব প্রার্থীই নিজ নিজ দলের পক্ষে উন্নয়ন, ন্যায্যতা ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের বার্তা দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এর মধ্যে বিএনপি প্রার্থী উন্নয়নের ৩১ দফা ও স্থানীয়ভাবে প্রয়োজনীয় সব উন্নয়ন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। একই সঙ্গে জেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সম্ভাবনাময় কৃষি নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন। অন্যদিকে জামায়াত প্রার্থীরা ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বলছেন, সুষম উন্নয়নের পাশাপাশি ন্যায়সংগত অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। বলছেন, অবহেলিত চুয়াডাঙ্গার উন্নয়নে তিনি যথাযথ ভূমিকা রাখতে চান।

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী মো. শরীফুজ্জামান জানান, সাংগঠনিকভাবে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে জেলা বিএনপির অবস্থান এখন অনেক শক্ত। নেতা-কর্মী এবং ভোটাররা তাঁকেই সংসদে দেখতে চান। ইউনিয়ন থেকে উপজেলা, পৌর ও জেলা কমিটির নেতারা তাঁর সঙ্গে মাঠে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা-১ আসন বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তাই ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

এ আসনে জামায়াত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল বলেন, ‘সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে ভোটাররা এবার দাঁড়িপাল্লাকেই বেছে নেবেন। কারণ জুলাই আন্দোলনের পর নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ দেখেছিল তা অনেকাংশেই পূরণ হয়নি। রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন এখনো সমাজে বিদ্যমান। জামায়াত নেতা-কর্মীরা কখনই কোনো অন্যায় কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এজন্য ভীতিহীন, বাধাহীন ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হলে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ভোটাররা পরিবর্তনের লক্ষ্যে এবার জামায়াত প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।’ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাওলানা জহুরুল ইসলাম জানান, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে ভোটাররা তাঁকেই নির্বাচিত করবেন। ভোটারদের কাছ থেকে যে সাড়া তিনি পাচ্ছেন তাতে বিজয়ের ব্যাপারে তিনি অনেকটাই আশাবাদী।

নির্বাচনে বিজয়ের বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী মাহমুদ হাসান খান জানান, এ আসনটি অতীতে একাধিকভার বিএনপির দখলে ছিল। নিজের ব্যক্তি ইমেজ এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত হওয়ায় জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। তিনি মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এ আসনে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত। জামায়াত প্রার্থী অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন বলেন, সাধারণ ভোটাররা এবার পরিবর্তন চান। তাঁরা চাঁদাবাজ, দখলদারদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে জামায়াতকে বেছে নেবেন। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাসানুজ্জামান সজীব বলেন, গত ৫৩ বছর জনগণ যাদের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছে, তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য এবারের নির্বাচনে ভোটাররা ইসলামী আন্দোলনের প্রতি আস্থা রাখতে চান।