জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ সোমবার ঘোষণা হচ্ছে। বহুল প্রত্যাশিত হাসিনার গণহত্যার রায়ে অপেক্ষায় রয়েছে গোটা জাতি। রায় শোনার জন্য বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীর নজর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দিকে। গণহত্যার দায়ে সরকারের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই হবে প্রথম বিচারের রায়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুন্যাল-১-এর বিচারক বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করবে। এই ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্যরা হলেন—বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রেজিস্ট্রার অফিস জানিয়েছে, আজ ট্রাইব্যুনাল-১ সকাল ১১টায় বসবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটিই হবে সর্বপ্রথম রায়। মানবতাবিরোধী এ মামলায় হাসিনাসহ আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে প্রসিকিউশন। হাসিনার মামলার রায় বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টেলিভিশনগুলোতে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। এছাড়া রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বড় পর্দায় বিচার কার্যক্রম দেখানো হবে।
হাসিনা ছাড়াও এই মামলার অপর দুই আসামি হচ্ছেন—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পালিয়ে বর্তমানে ভারতের আশ্রয় রয়েছেন। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হয়েছেন। তিনি অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী নামে পরিচিত) হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের কী সাজা হতে পারে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি এদিন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপির পরিণতিও জানা যাবে।
এদিকে হাসিনার গণহত্যার রায়কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও। এর পাশাপাশি মাঠে সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। ঢাকা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সেনা মোতায়েনের জন্য সেনা সদরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের কথিত লকডাউন ও শাটডাউনের নামে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণসহ নাশকতা প্রতিরোধে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ জুলাইয়ের পক্ষের দলগুলোর নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগ
হাসিনাসহ এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রসিকিউশন ৮ হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগ দাখিল করে। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার।
আবু সাঈদ হত্যার নির্দেশসহ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫ অভিযোগ
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের মূল অভিযোগ হচ্ছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে আন্দোলন চলাকালে হাসিনা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক এবং পদ্ধতিগত দমনপীড়ন চালানোর সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন যা গণহত্যা, খুন এবং ভয়াবহ নির্যাতনের শামিল। প্রতিবেদনে প্রধান যে অভিযোগ আনা হয় সেগুলো হলো সরাসরি আদেশ অর্থাৎ শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের সব বাহিনী, তার দল আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো বিশেষ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরাসরি নির্দেশ দেন। গণহত্যা ও নির্যাতন হাসিনার নির্দেশের ফলে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত, অঙ্গহানি এবং নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
আজ রায় হতে যাওয়া মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়, ষড়যন্ত্র, উসকানি, গণহত্যা, পরিকল্পনাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এসব অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই-আগস্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চালানো গুলিতে প্রায় দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। আহত করা হয় প্রায় ২৫ হাজার মানুষকে। অনেকেই স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গেছেন, চোখ হারিয়েছেন অনেকেই। তাদের বিরুদ্ধে আনা প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা ব্যাপক উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ওই বক্তব্যে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ন্যায্য দাবিতে ডাকা আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা, রাজাকারের নাতি-পুতি বলে উল্লেখ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায়’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার উপর আক্রমণ করে তাদের হতাহত করে।
দ্বিতীয় অভিযোগটি হলো হাসিনা হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ’ দিয়েছেন । যেটি বাস্তবায়ন করেছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় তৃতীয় অভিযোগটি আনা হয়। চার নম্বর অভিযোগ হলো আসামিদের নির্দেশে পাঁচ আগস্ট রাজধানীর চাঁনখারপুল এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক আন্দোলনকারী ছয় জনকে গুলি করে হত্যা করা । এতে বলা হয়েছে হত্যার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, ষড়যন্ত্র ও সম্পৃক্ততার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন শেখ হাসিনাসহ তিন আসামি।
৫ আগস্ট এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে আসার সময় আশুলিয়ায় ছাত্রদের গুলি করে হত্যা করে লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়, যার মাঝে একজন জীবন্তও ছিল। এ ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামি মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।
যেভাবে সম্পন্ন হয় মামলার বিচার প্রক্রিয়া
মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জনের সাক্ষ্য-জেরা শেষ হয়। যুক্তিতর্কের শেষ দিন, অর্থাৎ ২৩ অক্টোবর সমাপনী বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশ্বব্যাপী হেভিওয়েট নেতাদের যেভাবে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তিনি সেসব বর্ণনা ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন। পরে আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তি উপস্থাপনের কয়েকটি বিষয়ে জবাব দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তাদের কিছু কথার পাল্টা উত্তর দেন স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী আমির হোসেন। এভাবে হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বীভৎসতার চিত্র তুলে ধরেন খোকন চন্দ্র বর্মণ। ৮ অক্টোবর মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরার মাধ্যমে শেষ হয় সাক্ষ্য গ্রহণের ধাপ। এরপর প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয় ২৩ অক্টোবর।
গত ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনে জমা দিয়েছিল তদন্ত সংস্থা । এরপর ১ জুন রাষ্ট্রপক্ষ হাসিনাকে ট্রাইব্যুনালের প্রধান আসামি হিসেবে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করে । পরে ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ সময় এক পর্যন্ত মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ট্রাইব্যুনাল আবেদন মঞ্জুর করার পর তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন।
২৮ দিনে ৫৪ জনের সাক্ষ্য-জেরা
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে ৫৪ সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় চলতি বছরের ৩ আগস্ট। প্রথম সাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন জুলাই-আগস্টে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে বীভৎসতার শিকার খোকন চন্দ্র বর্মণ। লিখিত সাক্ষ্য দেন দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী মরহুম বদরুদ্দীন উমর। এছাড়া তারকা সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ৮ অক্টোবর মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জবানবন্দির মাধ্যমে শেষ হয় সাক্ষ্য গ্রহণের ধাপ। এরপর প্রসিকিউশন ও স্টেট ডিফেন্স আইনজীবীর যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয় ২৩ অক্টোবর। এরপর থেকেই মূলত রায়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। আজ এই রায় ঘোষণা করা হবে বলে গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার ঘোষণা করেন।
সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা রাষ্ট্রপক্ষের
মানবতাবিরোধী এ মামলায় হাসিনাসহ আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে প্রসিকিউসন। তবে ফুল ডিক্লোজার করায় রাজসাক্ষী চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন তারা। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এমন একটি রায় প্রত্যাশা করেন তারা। শেখ হাসিনাসহ আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতে ট্রাইব্যুনালে সব ধরনের প্রমাণাদি দাখিল করা হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমরা দীর্ঘ একটি যাত্রা শেষ করে এখন চূড়ান্তপর্বে উপনীত হয়েছি। এই বিচার প্রক্রিয়া আমরা যেভাবে করে এসেছি, সেটা ট্রান্সপারেন্ট (স্বচ্ছ) ছিল। এখানে অকাট্য ও শক্তিশালী সাক্ষ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। জাতির সামনে এই বিচার হয়েছে। আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের সামনে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার (স্বচ্ছ-পরিষ্কারভাবে) উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই আমরা সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করি।
সরাসরি সম্প্রচার হবে রায় ঘোষণা
হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলার রায় আজ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, রায়ের যে অংশটুকু ট্রাইব্যুনাল পড়ে শোনাবে, সে অংশটুকু ট্রাইব্যুনালের অনুমতিসাপেক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করবে। আর বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে দেশের অন্য সব গণমাধ্যম তা সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবে। এ ছাড়া রয়টার্সও বিটিভি থেকে সরাসরি সম্প্রচার করবে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
তিনি জানান, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দা লাগিয়ে রায় ঘোষণা দেখানো হবে। ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও এটি সম্প্রচার হবে। নারী হিসেবে অনুকম্পা পাবেন না হাসিনা আশা প্রসিকিউটরের হাসিনা নারী হিসেবে রায়ের ক্ষেত্রে কোনো অনুকম্পা পাবেন না বলে মনে করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার। গতকাল তিনি বলেন, সিআরপিসি আইন অনুযায়ী জামিনের ক্ষেত্রে নারী, অসুস্থ ব্যক্তি ও কিশোরদের বিশেষ সুবিধা রয়েছে। তবে রায়ের ক্ষেত্রে নারীকে কোনো অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার বিধান সাধারণ কিংবা ট্রাইব্যুনাল আইনেও নেই। অর্থাৎ আসামি নারী, নাকি পুরুষ তা বিবেচ্য নয়। বরং তিনি কী অপরাধ করেছেন এর ভিত্তিতেই শাস্তি নির্ধারণ হবে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হলে আসামি খালাস পাবেন।
তিনি বলেন, এ মামলায় আনা পাঁচটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন। একইসঙ্গে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রার্থনা করা হয়েছে। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ভুক্তভোগী শহীদ-আহত পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা জানিয়েছিলাম। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল যে আদেশেই দিক না কেন, প্রসিকিউশন তা মেনে নেবে। শেখ হাসিনা দণ্ডিত হলে ট্রাইব্যুনালের সাজা পরোয়ানা ইন্টারপোলে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
