Image description
 

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় আজ প্রকাশিত হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের দেওয়া ৫৯ পৃষ্ঠার এই রায়ের অনুলিপি আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

 

চলতি বছর ১৫ জানুয়ারি আপিল বিভাগের সংক্ষিপ্ত রায়ে বিচারিক আদালত এবং হাইকোর্টের দেওয়া সাজা বাতিল করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছিল।

পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত মামলাটির উদ্দেশ্য নিয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন। রায়ে বলা হয়েছে, "এই (মামলার) আপিলগুলোর বিষয়বস্তু গঠনকারী কার্যধারাগুলো উদ্দেশ্যমূলকভাবে গঠন করায় তা আইনের স্পষ্ট অপব্যবহার বলে প্রতীয়মান হয়েছে, যা দুরভিসন্ধিমূলক মামলার সমতুল্য।"

 

আদালত আরও বলেছেন, এই খালাসের রায় শুধু আপিলকারীদের ক্ষেত্রেই নয়, "এই রায় অন্যান্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে, যারা এ মামলায় আপিল করেননি।" এর ফলে খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানসহ অন্য আসামিরা আপিল না করেও সাজা থেকে খালাস পান।

 

এতিমদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ২০০৮ সালের ৩ জুলাই খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিল।

  • বিচারিক আদালতের রায় (২০১৮): ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত-৫ বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। তার বড় ছেলে তারেক রহমান, সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, সাবেক মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন।

     
  • হাইকোর্টের রায় (২০১৮): বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ করে সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। কাজী সালিমুল হক ও শরফুদ্দিন আহমেদের আপিলও তখন খারিজ হয়ে যায়।

     
  • আপিল বিভাগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত (২০২৫): হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া, শরফুদ্দিন আহমেদ ও কাজী সালিমুল হক আপিল করেন। এই তিনটি আপিলের প্রেক্ষিতেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে ১৫ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করেন এবং আজ সেই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলো।